কলকাতা, 14 জানুয়ারি : রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে 48 ঘণ্টা সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট । করোনা পরিস্থিতিতে চার পৌরনিগমের নির্বাচন আপাতত 4-6 সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা যায় কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই ৷ শুক্রবার তার জন্য এই সময়সীমা বেঁধে দিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন কি আদৌ সম্ভব, এই প্রশ্নও তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court orders SEC to take a decision over postponement of Municipal Election)।
এর সঙ্গে মামলাকারী সমাজকর্মী বিমল ভট্টাচার্যকে অবিলম্বে করোনা পরিস্থিতির অবনতি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ এতে কমিশনের পক্ষে নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হতে পারে, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের ।
উল্লেখ্য আগামী 22 জানুয়ারি বিধাননগর, শিলিগুড়ি, চন্দননগর ও আসানসোল পৌরনিগমে ভোট হওয়ার কথা (Bengal Civic poll 2022) । মামলাকারীর বক্তব্য, রাজ্যে যখন করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, তখন এক থেকে দেড় মাসের জন্য চারটি পৌরনিগম নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া উচিত । পরিস্থিতির উন্নতি হলে ফের ভোট করা যাবে । আর রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই স্বতন্ত্র এবং স্বাধীনভাবে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে ।
আরও পড়ুন : Bengal Civic Polls 2022 : পৌরভোটে স্থগিতাদেশ জারির এক্তিয়ার কার, প্রশ্ন হাইকোর্টের
গতকাল শুনানিতে নির্বাচন স্থগিত রাখা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission, SEC) ও রাজ্য সরকার একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা চালিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র জানান, আইনত নির্বাচন কমিশন ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ৷ তার জন্য রাজ্যের সম্মতি দরকার ৷ তাছাড়া, বর্তমান কোভিড আবহে ভোটারদের সুবিধার্থে ভোটদানের সময়সীমা একঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে ৷ এমনকি ভোটকেন্দ্রে থাকছে অ্যাম্বুল্যান্স ৷ তিনি বলেন, "আইন অনুযায়ী, কমিশন ইচ্ছামতো একা পূর্ব নির্ধারিত ভোট স্থগিত করতে পারে না ৷ যদি এই মুহূর্তে রাজ্যে মহামারী আইন ঘোষিত হয়, তাহলে এমনিতেই নির্বাচন বন্ধ করে দিতে হবে ।"
অন্যদিকে, ভোট স্থগিত নিয়ে কমিশনের দিকেই বল ঠেলেন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল ৷ তাঁর দাবি, ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত একমাত্র কমিশনই নিতে পারে ৷ রাজ্যের তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট পৌরনিগমের মধ্যে আসানসোলে 98% মানুষকেই টিকার প্রথম ডোজ এবং 72 শতাংশ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৷ চন্দননগরে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকাকরণের পরিসংখ্যান যথাক্রমে 98% এবং 95% ৷ আর শিলিগুড়ি ও বিধাননগরে 100% বাসিন্দাকেই টিকার দু'টি ডোজ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে ৷ তবে শিলিগুড়িতে 19.5%, আসানসোলে 16.4%, চন্দননগর থেকে প্রায় 9% করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে ।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার, দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে গতকাল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেছিল, "ভোট স্থগিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের বক্তব্যে সামঞ্জস্য নেই কেন ? আপনারা আগে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন ৷" আজ শেষমেশ নির্বাচন কমিশনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাল আদালত ৷