কলকাতা, 6 ডিসেম্বর: শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় 9 জানুয়ারির মধ্যে সিবিআইকে তদন্তের চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে ৷ আজ এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ । শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো আগামী 9 জানুয়ারি দু'মাসের সময়সীমা পূর্ণ হচ্ছে ।
আদালতের আরও নির্দেশ, যাঁরা 2016 সাল থেকে চাকরি করছেন এবং চাকরি নিয়ে প্রশ্নের মুখে নতুন করে মামলায় যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের 18 ডিসেম্বরের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য নোটিশ দিতে হবে ৷ ডিসেম্বরের বেতন দেওয়ার আগে তাঁদের সবাই নোটিশ পেয়েছেন কি না তা দেখে নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেবে । চার জানুয়ারির মধ্যে মামলাকারীরা এঁদের বক্তব্যের পালটা উত্তর দেবেন । নয় জানুয়ারির পর নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি শুরু হবে ডিভিশন বেঞ্চে ।
এ দিনের শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ না করলেও রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁর বিরুদ্ধে । তিনি বলেন, "কোনও অনুমানের ভিত্তিতে দুর্নীতি আছে বলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যায় না । বিচারবিভাগীয় জুলুমবাজি যাকে বলে, সেটাই করেছে সিঙ্গল বেঞ্চ । কারও কথা শোনা হয়নি । সিবিআইয়ের জুজু দেখানো ছাড়া সিঙ্গল বেঞ্চের আর কোনও উদ্দেশ্য যেন ছিল না । রাজ্যের টাকা সবার টাকা । রাজ্য তো চায়নি চাকরি যাক । তাহলে কে চাইছে চাকরি যাক ?" প্রশ্ন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তাঁর দাবি, সবার বক্তব্য আগে ভালো করে শোনা হোক ।
সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল দু'মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে । রিপোর্ট এখনও আসেনি । এলেই আদালতে পেশ করা হবে । শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, আদালত যাঁর পক্ষেই চূড়ান্ত নির্দেশ দিক না কেন তার ফলে বহু শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারী প্রভাবিত হবেন । যাঁরা আদালতে আসেননি তাঁদেরও জানানো দরকার যে, আদালতে মামলা বিচারাধীন । তাঁদের নোটিশ দেওয়া দরকার ।
বিচারপতি জানতে চান, যদি দেখা যায় যে, এই নিয়োগ বেআইনিভাবে হয়েছে, তাহলে এই গোটা প্রক্রিয়ার ব্যয়ভার কে বহন করবে ? তাঁর কথায়, "আগামী 9 জানুয়ারি যে রিপোর্ট সিবিআইয়ের দেওয়ার কথা রয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখে আমরা যদি দেখতে পাই যে দুর্নীতি হয়েছে তাহলে কী হবে ?"
রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিবিআই তদন্ত করবে ৷ যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা সবাই তো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না । যাঁরা দোষ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে । কিন্তু সবার চাকরি কেন যাবে ? ইতিমধ্যেই অনেকে জেলে আছেন, টাকা উদ্ধার হয়েছে । কিন্তু কেউ কি বলতে পারবে যে ওই টাকা শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছিল ? 9 জানুয়ারি সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখার পর শুরু হবে এই সমস্ত মামলার শুনানি ।
আরও পড়ুন: