কলকাতা, 30 জুন: কালীঘাটের কাকুর প্যারোল মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ তবে জামিন আবেদনের শুনানি শুক্রবার শুনলেন না বিচারপতি ৷ স্ত্রী'র পারলৌকিক কাজে উপস্থিত থাকার জন্য আগামী 16 জুলাই পর্যন্ত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের প্যারোল মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।
এদিন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে । কিন্তু বিচারপতি জামিনের আবেদনের শুনানি এদিন করতে রাজি হননি । শেষ পর্যন্ত সুজয়ের আইনজীবীদের অনুরোধে প্যারোলের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদনটি গ্রহণ করেন বিচারপতি। 13 দিনের প্যারোলের আবেদন করেন সুজয়ের আইনজীবীরা । বিচারপতি সুজয় কৃষ্ণের প্যারোল বাড়িয়ে 16 জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন । তবে শর্ত হিসাবে আদালত জানিয়েছে, এদিন বেলা তিনটের পর থেকে ইডি প্রয়োজনে সুজয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর একজন জওয়ান রাখতে পারে।
নির্দেশিকায় আদালত জানিয়েছে, অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর লেভেলের একজন অফিসার সুজয় কৃষ্ণের বাড়িতে উপস্থিত থাকবেন 16 জুলাই পর্যন্ত। একই সঙ্গে, একটা রেজিস্টার মেনে চলতে হবে বলেও জানান বিচারপতি । বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ তাঁর নির্দেশিকায় সাফ জানিয়েছেন, বাড়ির কাছাকাছি কোনও মন্দিরে যেতে চাইলে এবং তাঁর স্ত্রী'র শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য যেতে পারবেন সুজয় কৃষ্ণ। সেক্ষেত্রে তিনি পরিবারের পাঁচ জন সদস্য নিয়ে মন্দিরে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন। তবে 48 ঘণ্টা আগে তা জানাতে হবে। বাড়ির আশপাশে অকারণ ভিড় করা যাবে না বলেও জানান বিচারপতি ।
অন্যদিকে, এদিন ইডি-র আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সুজয় কৃষ্ণের জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, "সুজয় কৃষ্ণের সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের গভীর যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। তাঁর মোবাইলের সফটওয়ারে বিকৃতি ঘটানো হয়েছে, যাতে দূর্নীতি সংক্রান্ত কিছু তথ্য পাওয়া না যায়।" এর সঙ্গেই, এদিন সুজয়ের জামিন মঞ্জুর করলে তদন্ত থেমে যাবে। সত্য সামনে আসবে না বলেও দাবি করেন ইডি-র আইনজীবী। পাশাপাশি সুজয় কৃষ্ণের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত ফের এদিন জামিনের আবেদন করেন। দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি বলেন, "আমি ওকে 16 জুলাই পর্যন্ত প্যারোল দিতে চাই । কিন্তু আমি জামিনের আবেদনের ভিতরে ঢুকছি না।"
আরও পড়ুন: অবশেষে এল কেন্দ্রের চিঠি, আরও 6 মাস মেয়াদ বাড়ল মুখ্যসচিবের
উল্লেখ্য গত 27 জুন সুজয় কৃষ্ণের স্ত্রী বিয়োগের পর তড়িঘড়ি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কালীঘাটের কাকু। ইডি-র তরফে সঙ্গে সঙ্গে তথ্য প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় জামিনের বিরোধিতা করা হয়। কিন্তু বিচারপতি জানান, সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর প্যারোল নিশ্চয় মঞ্জুর করতে পারেন। সেই মতো প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর তিন দিনের প্যারোল মঞ্জুর করেছিল। এদিন সেটাকেই 16 জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।