কলকাতা, 17 নভেম্বর: আমহার্স্ট স্ট্রিটে থানায় ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় হাইকোর্টে পেশ হল ময়না-তদন্তের রিপোর্ট ৷ পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্রেন হ্যামারেজে মৃত্যু হয়েছে ব্যবসায়ীর। রিপোর্টে ব্যবসায়ীকে মারধর করার কোনও উল্লেখ নেই । মৃতের দেহের দ্বিতীয় ময়না-তদন্তের প্রয়োজন আছে কি না, সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত ৷ তবে, পুলিশ মর্গ থেকে ইতিমধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃতদেহ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত । পাশাপাশি এদিন সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷
বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যবসায়ী অশোক সাউকে ডাকা হয় । কয়েক ঘণ্টা পরেই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয় । অভিযোগ, জিজ্ঞসাবাদের সময় ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয় । ঘটনায় কাঠগড়ায় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ । ব্যবসায়ী শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে । শুক্রবার হাইকোর্টে পেশ করা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেই মারধরের কোনও উল্লেখই নেই । বলা হয়েছে ব্রেন হ্যামেরেজে মৃত্যু হয়েছে ব্যবসায়ীর ।
আরে এই প্রসঙ্গেই, মৃতের পক্ষের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, "অশোককে আইন মেনে সমন দিয়ে ডাকা হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজের সংরক্ষণ করা হোক এবং হার্ড ডিস্ক সিএসএফএসএলে পাঠানো হোক। যাতে কোনও তথ্য ডিলিট না হয়ে যায় ৷ থানার সর্বত্র সিসিটিভি থাকার কথা, সেটা আছে কি না দেখা হোক।
এই মামলায় প্রধান বিচারপতি জানতে চান, "মদনলাল গুপ্ত নামে এক ব্যাক্তির নাম উঠে এসেছে। কে এই ব্যক্তি?"
রাজ্যের আইনজীবী দেবাশিস রায় জানান, ইনি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। সম্ভবত ইনি ওই থানার কোন আধিকারিককে চেনেন। মাসে হাজার হাজার ফোন চুরি হয় এবং অনেক মানুষ তা কেনেন। কিন্তু যখনই সেটা চালু করা হয় তখন জানা যায় যে ফোন কার কাছে আছে। অশোক সাউকে থানায় সেটা জমা করতে বলা হয়েছিল। তিনি সম্ভবত নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, পরিবার বিক্ষুব্ধ হতে পারেন।
পালটা প্রধান বিচারপতি জানতে চান, "তাঁকে শুধু ফোন জমা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে লোক যাওয়ার দরকার কি ছিল ?"
মৃতের তরফে আইনজীবী বলেন, "পরিবার আজকেই মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন করবেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে ব্রেন হ্যামারেজের কারণে মারা গেছে। কিন্তু কেন সেটা হল সেটা নিশ্চিত করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখা দরকার।" মৃতের পরিবারের আইনজীবী অমৃতা পাণ্ডে বলেন, "আমরা এই মামলায় সংযুক্ত হতে চাই। আদালত যদি দ্বিতীয় ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন, যদি কোনও রেল হাসপাতালে তা করা হয়।"
শেষে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ তখনই দেওয়া হয় যখন দেখা যায় যে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ৷ কিন্তু সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি। ব্রেন হ্যামারেজের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি 23 নভেম্বর ৷ ওই দিন শুনানি হবে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে।
আরও পড়ুন:
1. পাক মহিলা গ্রেফতার কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য! কথা বলতে পারেন ঝরঝরে বাংলায়
2. বড়সড় সাফল্য! কুলগামে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে নিকেশ 5 জঙ্গি
3. 'উনুন নেই রান্না করব কীসে ? আজও অভুক্ত থাকতে হবে !' জয়নগরে গ্রামে ফিরে দিশেহারা ঘরছাড়া মহিলারা