কলকাতা, 21 জুন: পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে হিংসার ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৷ বুধবার মামলার শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘যদি একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে এত রক্তপাত, হিংসা, সংঘর্ষ হয় ৷ তাহলে এই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত ।’’ এই ধরনের ঘটনা রাজ্যের জন্য লজ্জার বলেও তিনি মন্তব্য করেন ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর যে সমস্ত প্রার্থীদের প্রতীক দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজনের নাম মঙ্গলবার থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ৷ সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভাঙড়ের সিপিএম প্রার্থীরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে অন্তত 16-17 জনের নাম বাদ গিয়েছে ৷
মামলাকারী আইনজীবী জানান, 19 জুন পর্যন্ত ওই প্রার্থীদের নাম তালিকায় ছিল । হঠাৎ আমাদের নাম বাদ গেল ? এই মামলায় আদালতের নির্দেশ, প্রার্থীরা যদি নিজেদের ইচ্ছায় মনোনয়ন তুলে নেন, তবে আলাদা বিষয় । যদি তা না করেন, তবে সেই প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিতে হবে । বিষয়টি খতিয়ে দেখবে কমিশন ।
এই মামলার শুনানি চলাকালীনই পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে হিংসার অভিযোগ ওঠে ৷ সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বিচারপতি বলেন, ‘‘যদি একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে এত রক্তপাত, হিংসা, সংঘর্ষ হয় ৷ তাহলে এই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত ।’’
রাজ্যের তরফে অতীতে বাম জমানায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রসঙ্গ তোলা হয় ৷ সেই নিয়ে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘1999 সালে কী হয়েছিল, 2003 সালে কী হয়েছিল, সেসব কথা বলবেন না ।’’ তাছাড়া রাজ্যের বক্তব্য, মাত্র 8 টা ব্লকে অশান্তি হয়েছে । বাকি শান্তিপূর্ণ । তখন বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ‘‘আমার কাছে মামলা আসছে যেখানে দেখা যাচ্ছে মানুষদের মারধর করা হচ্ছে, ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে । এসব কী ?
তাছাড়া আদালতের বক্তব্য, যদি আইন-শৃঙ্খলার এই অবস্থা হয়, যে প্রার্থীরা সময় মতো মনোনয়ন পেশ করতে পারছেন না, তাহলে তাদের অতিরিক্ত সময় তো দিতেই হবে ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে নথি বিকৃতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের