কলকাতা, 25 অগস্ট: রাজ্যে পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতন এত কম কেন ? রাজ্যে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের থেকেও শিক্ষকদের বেতন কম কেন ? আজ এই প্রশ্নই তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷ এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল সিঙ্গল বেঞ্চ ৷ পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতন বাবদ কেন্দ্র কত টাকা দেয় ? রাজ্যই বা কত টাকা দেয় পার্শ্ব-শিক্ষকদের ? কেন্দ্র ও রাজ্যকে হলফনামায় তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷
সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে পার্শ্ব-শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয় বিভিন্ন স্কুলে ৷ এই প্রকল্পে অন্যান্য রাজ্যে পার্শ্ব-শিক্ষকরা অনেক বেশি বেতন পাচ্ছেন ৷ কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে একজন পার্শ্ব-শিক্ষকের বেতনের পরিমাণ বাইরের রাজ্যের থেকে অনেকটাই কম বলে অভিযোগ ৷ আর সেই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয় ৷ উল্লেখ্য, পার্শ্ব-শিক্ষকদের বেতনের 60 শতাংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার ৷ বাকি 40 শতাংশ দেয় রাজ্য ৷ কেন্দ্রের আইনজীবী আজ আদালতে দাবি করেন, তাদের তরফ সমস্ত টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও বেতন কম পাচ্ছেন পার্শ্ব-শিক্ষকরা ৷
এ নিয়ে সর্বশিক্ষা মিশনের আইনজীবীর প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করে আদালত ৷ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, "আপনার দেওয়া তথ্যের জাস্টিফিকেশন চাইছি ৷ এটাই ফ্যাক্ট ৷ এটা আজ সকালের প্রথম মামলা ৷ সঠিক ও স্বচ্ছ তথ্য প্রদান করুন ৷" মামলাকারির আইনজীবীর বক্তব্য, একজন শিক্ষক-শিক্ষিকার থেকে একজন গ্রুপ-ডি কর্মচারীর বেতন বেশি ৷ এটা মানা সম্ভব না ৷ রাজ্যে অশিক্ষক কর্মীদের থেকেও কম বেতন পাচ্ছেন পার্শ্ব-শিক্ষকরা ৷ আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘শিক্ষক হয়েও এত কম বেতন কেন ?’’
আরও পড়ুন: কেন বেতন বন্ধ করা হল শিক্ষকদের, ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে 6 লাখ টাকা জমা করতে নির্দেশ হাইকোর্টের
শুনানিতে রাজ্য জানায়, সর্বশিক্ষা মিশনের খাতে কেন্দ্র যে 60 শতাংশ টাকা দেয়, তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁর যুক্তি সেই কারণেই নাকি বেতনের এই বৈষম্য ৷ পালটা সওয়ালে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ‘‘কেন্দ্র বরাদ্দ কমালেও, যে টাকা রাজ্যে আসছে তার মধ্যে থেকেই বেতনে সমতা বজায় রাখতে পারে সরকার ৷ সব তরফে সওয়াল জবাব শেষে বিচারপতি কেন্দ্র, সর্বশিক্ষা মিশন এবং রাজ্যকে এই বৈষ্যমের কারণ এবং কত টাকা কেন্দ্র ও রাজ্য বরাদ্দ করে ? সে সব তথ্য-সহ হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ আগামী 15 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি ৷