কলকাতা, 3 অক্টোবর: রানিনগর 2 পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী কংগ্রেস সদস্য ঊর্মিলা খাতুনকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হেয়ার স্ট্রিট থানাকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । এই ঘটনায় পুলিশ এফআইআর করেনি শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন ।
রানিনগর 2 পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির বৈঠকের আগে 'অপহৃত' কংগ্রেস সদস্য ঊর্মিলা খাতুনকে এ দিন হাজির করা হল এজলাসে । বিচারপতি নিজে কথা বলেন তাঁর সঙ্গে । ঊর্মিলা আদালতকে জানান, কোনও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নয়, তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়ি ফিরতে চান । এই শুনে আদালত নির্দেশ দেয়, মুর্শিদাবাদের রানিনগরের জয়ী কংগ্রেস সদস্য ঊর্মিলা খাতুনকে আজ তাঁর বাড়ি পৌঁছে দেবে হেয়ার স্ট্রিট থানা । বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর আরও নির্দেশ, হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি তাঁকে বাড়ি ফেরাতে পদক্ষেপ করবেন । সেখানে জেলা পুলিশ তাঁর বাড়িতে নিরাপত্তা দেবে ।
আদালত এ দিন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একজন তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ করলেন তাঁর বাবা । অথচ থানা কোনও এফআইআর করার প্রয়োজনবোধ করল না । পুলিশের এই মনোভাবে বিরক্ত আদালত । আদালতের ওই তরুণীকে দেখে ও তাঁর আড়ষ্টতা দেখে মনে হয়েছে, তিনি চরম ভীত । তাই বাড়ি ফেরা বা অন্যত্র থাকার কথাও তিনি স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: 'তদন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন বিচারপতি', হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে অভিষেক
আদালত এ দিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, কেউ কোনও ভাবে তাঁকে ভয় দেখালে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে । তিনি যেই দলেরই হোন । গত 26 সেপ্টেম্বর রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা । কংগ্রেসের আপত্তিতেই এই নির্বাচন স্থগিত করেন বিচারপতি । কংগ্রেসের তরফে আইনজীবী জানিয়েছিলেন, 25-27 সেপ্টেম্বর নব নির্বাচিত প্রধান এবং উপপ্রধানদের তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবির চলবে । এই পরিস্থিতিতে কীভাবে নির্বাচন হবে ? তারপরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, নতুন করে তারিখ ঠিক করে আদালতে জানাতে হবে ।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে তিন কংগ্রেস সদস্য হানিফ শেখ, ঊর্মিলা খাতুন, ফরিদা বিবি তৃণমূলে যোগদান করেন । রানিনগর-2 পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির মোট সদস্যের সংখ্যা 42 জন । দু'মাস আগেই হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ও বাম-কংগ্রেস জোট উভয়ের স্থায়ী সমিতিতে সদস্য সংখ্যা ছিলেন 21 জন করে। কিন্তু স্থায়ী সমিতির নির্বাচনের আগেই তিন কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হয় 24 জন । যদিও অভিযোগ, কংগ্রেস সদস্যদের হুমকি দিয়ে দলে যোগদান করিয়েছে শাসক দল ।
