কলকাতা, 13 ডিসেম্বর: বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলায় পুলিশকে ভর্ৎসনা বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ৷ পুলিশের আচরণে বিরক্ত হয়ে বিচারপতি বলেন, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবিত থাকলে আপনারা তাঁকেও অভিযুক্ত করে দিতেন।" বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । সেখানে রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার কথা ছিল । চিঠি দেখে বিচারপতির প্রশ্ন, "সেটায় ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে এমন অপরাধ কী আছে?" এর পালটা রাজ্যের বক্তব্য, "তদন্ত করে দেখতে হবে ।"
বিস্মিত বিচারপতি বলেন, "তার মানে ? আপনারা আগে ধারা যোগ করে দেন, পরে তদন্ত করে দেখেন আদৌ ধর্তব্যযোগ্য কি না? ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ জীবিত নেই । কি যে করতেন? তাকেও অভিযুক্ত করে দিতেন । বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন এর মানে এই নয় যে সেই চিঠিতে দু'টি গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা লাগতে পারে বা গুজব থেকে অশান্তি ছড়াতে পারে ।" বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আরও একটি মামলায় অভিযোগ তিনি চালককে টোটো চালাতে বাধা দিয়েছেন। অভিযোগ শুনে বিচারপতির মন্তব্য, "এই সব অভিযোগ করে আপনারা রাজ্য সরকারকে অপমান করছেন । বিশ্বাস করি না রাজ্যের উচ্চপদস্থ কেউ এগুলো আপনাদের করতে নির্দেশ দিতে পারে ।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পাঁচ পাতার চিঠি লিখেছিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী । সেই নিয়ে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করে বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক । বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যাঙ্গ করেছেন দাবি করে মামলা দায়ের করেন তিনি । এছাড়া বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার । এছাড়া ও মোট পাঁচটি অভিযোগে এফআইয়আর হয় । সেই সমস্ত মামলায় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে নোটিশ দেয় ।
সমস্ত এফআইআর খারিজের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন এই উপাচার্য ৷ তাতে গত 10 নভেম্বর বিচারপতি সেনগুপ্ত শান্তিনিকেতন থানাকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন । কিন্তু সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে অযথা হয়রানি বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেছিলেন বিচারপতি । সেই মামলার শুনানি বুধবার শেষ হয়েছে । বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নয় । আদালতের নির্দেশ ছাড়া চার্জশিট বা কোন ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া যাবে না ৷ এমনটাই এদিন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । একইসঙ্গে রায়দান স্থগিত রেখেছেন তিনি ৷ 11 জানুয়ারি বিকেল তিনটে এই মামলার রায়দান হবে ।
আরও পড়ুন: