কলকাতা, 14 জুন: খড়গপুর আইআইটি'র ছাত্র ফাইজান আহমেদ খুনের তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আইপিএস কে জয়রমনের নেতৃত্বে 3 সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ৷ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটিতে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক এবং সিআইডি-র একজন আধিকারিক থাকবেন ৷ 14 জুলাই প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ উল্লেখ্য, গত 6 জুন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্তার কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ ছিল, আইআইটি-র ছাত্র ফাইজান আহমেদকে খুন করা হয়েছে ৷
ফাইজান আহমেদ খুন হয়েছেন, তা তাঁর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অজয় গুপ্তা এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন দল ৷ যার পরেই খড়গপুর আইআইটি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি ৷ এমনকী আইআইটি-কে এই ঘটনায় আংশিক অভিযুক্ত হিসেবে মন্তব্য করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আজ আদালতে মামলার শুনানিতে ফের একবার সেই বিষয়টি উল্লেখ করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ তাই আইআইটি'র আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাওয়ায় তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন বিচারপতি ৷
জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘‘আইআইটি বা তাদের কয়েকজন আধিকারিক এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৷ অন্তত আংশিক অভিযুক্ত ৷ তাই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখন দেওয়া সম্ভব নয় ৷ চার্জশিট জমা পড়ার পরে, রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টা ভাবা যাবে ৷’’ অন্যদিকে, এ দিন রাজ্য সরকারের আইনজীবী সম্রাট সেন আদালতে আরও একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের আবেদন জানান ৷ সেখানে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য চায় ফের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হোক ৷’’
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটির ছাত্র ফাইজান খুন হয়েছিলেন, আদালতে রিপোর্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির
কিন্তু রাজ্যের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি ৷ তিনি জানিয়ে দেন, নতুন বোর্ড গঠনের কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছে না আদালত ৷ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে খুনের ইঙ্গিত আছে ৷ এরপর যা করার সেটা নতুন তদন্ত কমিটির মতামতের ভিত্তিতে হবে ৷ বুধবার মামলার শুনানিতে মৃত ছাত্র ফাইজান আহমেদের পরিবারের তরফে একটি আবেদন করা হয়েছিল ৷ সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তথ্য বিকৃত করা, নথি লোপাটের মতো অভিযোগে নতুন করে মামলা দায়ের করার আবেদন করেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন: আইআইটি ছাত্রের দেহ আনতে অসমে সিআইডি'র বিশেষ দল
কিন্তু, বিচারপতি সেই আবেদনটিকে আপাতত নাকচ করে দিয়েছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, আদালত এখনই এই বিষয়গুলিতে ঢুকতে নারাজ ৷ নতুন তদন্তকারী কমিটি সেই বিষয়গুলি দেখবে ৷ তবে, ফাইজানের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের 21দিন পরেও দেহ অসমে পাঠায়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ যেখানে গত 6 জুনের শুনানিতেই বিচারপতি নির্দেশ দেন, দ্রুত ফাইজানের দেহ অসমে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে রাজ্য ৷ এ নিয়ে বিচারপতি ফের একবার দ্রুত দেহ ফেরানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটি'তে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা
সবশেষে বিচারপতি তদন্তকারী কমিটি নিয়ে নির্দেশ দেন ৷ সেখানে তিনি জানিয়েছেন, আইপিএস কে জয়রমনের নেতৃত্বে 3 সদস্যের তদন্ত কমিটিতে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার অবসরপ্রাপ্ত একজন আধিকারিক থাকবেন ৷ আর একজন হলেন সিআইডি-র আধিকারিক ৷ তবে, এই কমিটি তদন্তের সুবিধায় অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী নিয়োগ করতে পারেন ৷ আর তদন্তের প্রয়োজনে আধিকারিকরা নার্কো অ্যানালিসিস বা ট্রুথ সেরাম ব্যবহার করতে পারবেন বলে এ দিন জানিয়েছেন বিচারপতি ৷