কলকাতা, 16 অক্টোবর: উপাচার্য নিয়োগ বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করেননি, সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। এই মামলা গ্রহণযোগ্য কি না, তা আগে খতিয়ে দেখবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে, মামলাকারীকে তার পরিচয় আদালতকে জানাতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি সংবিধানের 361 ধারায় রাজ্যপাল তথা আচার্যকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তার বিচার করবে আদালত, এমনটাই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। তারপরই এই মামলার শুনানি করবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
কেন্দ্রের আইনজীবী সোমবার অভিযোগ করেন এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। রাজনৈতিক ব্যাক্তির দায়ের করা মামলা। এরপরই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর প্রধান বিচারপতি স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, উপাচার্য নিয়োগ বিলে সই না করা নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছিল বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ হলফনামা তলব করেছিল রাজভবনের কাছে। এদিন রাজভবনের তরফে আইনজীবী সেই হলফনামা দিতে গেলে আপাতত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ তা গ্রহণ করেননি। পুজোর ছুটির পর এই মামলা যখন পুনরায় শুনানির জন্য আসবে তখন আইনজীবীকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি বিল (সংশোধনী)' পাশ হয় বিধানসভায়।
রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর আইনে পরিণত হতে এপর্যন্ত ওই বিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় পড়ে আছে।
যা নিয়ে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে।মামলা করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সায়ন মুখোপাধ্যায়। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চের বক্তব্য ছিল, "আমরা শুধু সময় নিয়ে ভাবছি, রাজ্যপালকে কোনওভাবে শোকজ করা যায় না। কিন্তু সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলেও কি আদালত প্রশ্ন করতে পারে না ?"
আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত বলেন, "উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের কাছে তিনটি বিল পাঠানো হয়ছে। এখনও সেই বিল সই করেননি তিনি। এদিকে উপাচার্য পদের সময়সীমা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ হয়ে আসছে। অযথা সময় নষ্ট করছেন রাজ্যপাল। এভাবে তিনি বিল আটকে রাখতে পারেন না। 15 জুন 2022 বিলটি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছিল। 7 জুন বিধানসভায় তা পাশ হয়েছে। এখনও সেই বিল স্বাক্ষর করেননি রাজ্যপাল।"
আরও পড়ুন: নবরাত্রির দ্বিতীয়াতে অধিবেশন ডেকে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত সরকারের, অভিযোগ শুভেন্দুর
একই সঙ্গে, তিনি সওয়াল করেন, "রাজ্যপালের এই উপাচার্য নিয়োগে কোনও ক্ষমতা নেই। তার প্রমাণ আমরা আদালতে জমা করেছি। ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনিভার্সিটি আইন অনুযায়ী রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগের বিল আটকে রাখতেও পারে না।" সওয়ালের পর বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, সংবিধান সময় বেঁধে না দিলেও এক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত সময় ধরে নেওয়া হয়। এই মামলার গ্রহনযোগ্যতা ও রাজ্যপাল উত্তর দিতে পারেন কি না, সেটা হলফনামা দেখেই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান বিচারপতি। আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হলফনামার পরেই নেবে, নির্দেশে জানিয়েছিল বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। এদিন সেই নির্দেশে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দিয়েছে।