কলকাতা, 14 নভেম্বর: একাধিক ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে । রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil giri)। তাঁর অপসারণের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে । তাছাড়া রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি (Dengue Situation in West Bengal) যথেষ্ট উদ্বেগজনক । এমনই পরিস্থিতির মধ্যে বসছে রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন । মনে করা হচ্ছে বিরোধী বিধায়কদের তুমুল আক্রমণের মুখে পড়তে হবে শাসক তৃণমূলকে ।
অখিল এবং ডেঙ্গি পরিস্থিতি ছাড়াও এই অধিবেশনে আরও একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যু চর্চায় আসতে পারে । সূত্রের খবর, তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই অধিবেশনে সিএএ-র বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা হবে। শেষমেশ তা হলে বিরোধী বিজেপি বিধায়করা যে তার প্রতিবাদে সরব হবেন তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই । সবমিলিয়ে পরিস্থিতি যা শাসক-বিরোধী বিধায়কদের তরজা ঘিরে সরগরম হয়ে উঠতে পারে অধিবেশন ।
তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একাধিক ইস্যুতে একাধিকবার উতপ্ত হয়েছে বিধানসভার অধিবেশন। শাসক-বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে বচসা থেকে শুরু করে ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত দেখেছে বিধানসভা। বিজেপি বিধায়কদের হট্টগোলের জেরে বাজেট অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ পর্যন্ত শেষ করতে পারেননি রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় তাপমাত্রা নেমে18 ডিগ্রি, শহরে শীতের আমেজ
এরই মধ্যে অখিল গিরির কুরুচির মন্তব্য ঘিরে কার্যত গোটা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে । একটি দলীয় সভা থেকে অখিল বলেন, "আমরা রূপ বিচার করি না । কিন্তু তোমার (শুভেন্দু) রাষ্ট্রপতি কে কেমন দেখতে বাবা ? " এ নিয়ে প্রতিবাদে সরব সকলেই । শুভেন্দু বলেন, "তাঁর মন্ত্রী এই ভাষায় কথা বলার পরও মুখ্যমন্ত্রী চুপ করে থাকেন কী করে ? অখিল গিরির বিধায়ক পদ অবিলম্বে খারিজ করতে হবে ।'
এদিকে, দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হল নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন । করোনার আগে সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন (Anti CAA Protest) দেখেছিল দেশ । করোনার ভয় কাটতেই আবারও ইতিউতি ধার বাড়ছে আন্দোলনের (Once again CAA has come into the center stage of national politics) । পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও নয়া রণকৌশল নিয়ে হাজির । বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে গুজরাতের দুটি জেলায় কার্যত সিএএ লাগুই করে দেওয়া হয়েছে । আনন্দ এবং মহসেনা এই দুটি জেলার বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মের মানুষরা নাগরিকত্ব পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
গুজরাতের এই ঘটনা স্বভাবতই প্রভাব ফেলেছে বাংলাতেও । বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেই দিয়েছেন, "সিএএ লাগুর এই শুরু।" কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নীশীথ প্রামানিক আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, "শুধু এ রাজ্য নয় গোটা দেশেই সিএএ লাগু হবে।" এমতাবস্থায় শুরু হতে চলা বিধানসভার অধিবেশনে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে রাজ্য । পরিস্থিতি যা তাতে সেই প্রস্তাব অধিবেশনে এলে তা ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত হবে বিধানসভা।