কলকাতা, 2 অগস্ট: "যদি কেউ টাকা নেয়, তাঁর ছবি তুলে আমাকে পাঠাবেন"। এমন একটি বিবৃতি পাঠ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ বুধবার সকালে রাজভবনে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের এই বিবৃতিটি শোনান ৷ এরপর রাজ্যপাল পালটা প্রশ্ন করেন, এই বিবৃতিটি কার ? পরে নিজেই বলেন, "কোচবিহারে এই বিবৃতিটি দিয়েছিলেন আমার সাংবিধানিক সহকর্মী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷"
মুখ্যমন্ত্রীর এমন অনুপ্রেরণাতেই তিনি আজ থেকে রাজভবনে দুর্নীতি বিরোধী সেল খুললেন বলে জানালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ৷ এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সন্ত্রাস সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শান্তিকক্ষ খুলেছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। রাজ্যপাল পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন, এই সমস্ত অভিযোগ কলকাতা হাইকোর্টকে জানাতে হবে।
বুধবার সকালে রাজভবনে 'আমনে সামনে' শীর্ষক একটি কর্মসূচির সূচনা হয় ৷ তাতে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন পড়ুয়ারা ৷ সরাসরি কথাও বলেন ৷ এই কর্মসূচির পাশাপাশি তিনি অ্যান্টি করাপশন সেলেরও সূচনা করেন ৷ আগামিদিনেও এই ধরনের কর্মসূচি পালিত হবে বলে রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজভবনের ‘শান্তি কক্ষে’ পাঁচশোরও বেশি অভিযোগ, সবার উপরে দক্ষিণ 24 পরগনা
এই সেল প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জানান, সাংবিধানিক পদাধিকার বলে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তিনি ৷ তাই রাজ্যপাল চান পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যেন কোনও দুর্নীতি না-হয় ৷ তিনি বলেন, "অ্যান্টি করাপশন সেল তৈরির প্রাথমিক কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দুর্নীতিমুক্ত করা ৷ তবে সার্বিক দুর্নীতি রুখতে এই প্রয়াস ৷"
রাজ্যপাল আরও জানান, এই অ্যান্টি করাপশন সেলের মাধ্যমে রাজ্যের যে কোনও মানুষ রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ৷ দুর্নীতির কথা জানাতে পারেন ৷ এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়লে তা ভালো করে খতিয়ে দেখা হবে ৷ সেই অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে ৷ রাজ্যপালের কথায়, "এই সেলটি একটি লিগ্যাল ফোর্স হিসেবে কাজ করবে ৷ অভিযোগের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য পদক্ষেপ করবে ৷"
আরও পড়ুন: 'শুভেন্দু অধিকারীর দাবিকে দাবি হিসেবেই দেখব', 355 ধারা লাগু নিয়ে মত রাজ্যপালের
এদিন রাজভবনে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, "দুর্নীতি বিরোধী সেলের লক্ষ্য প্রান্তিক মানুষকে নিজের অভিযোগ জানানোর সুযোগ করে দেওয়া ৷ রাজভবন গরিব মানুষের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করছে ৷" এই সময় রাজ্যপাল একটি বিবৃতি পড়ে শোনান ৷ তার আগে তিনি বলেন, "এই দুর্নীতি বিরোধী সেল নির্মাণের অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার কাছ থেকে ৷" এরপরই উপস্থিত সকলের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "কাউকে টাকা দেবেন না ৷ আমরা চুরি গ্রহণ করব না ৷ যদি কেউ টাকা চায়, তাঁর ছবি তুলে আমাকে পাঠাবেন ৷" তিনি জানান, এই বিবৃতি কার্যকর করা, বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছেন তিনি ৷