কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: অধস্তনের ভূমিকা পালন করে পড়ুয়াদের উপকারই করছেন রাজ্যপাল। উপাচার্যের ভূমিকায় আচার্যের অবস্থানকে এভাবেই ব্যাখ্য়া করলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপি নেতা তথাগত রায়।
রাজ্যের উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এবার উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের পালটা শুক্রবার বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "কোন আইন বলে রাজ্যপাল এটা করলেন সেটা বোঝা যাচ্ছে না !" প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করবে বলেও ভাবছে শাসকদল। এই বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক তথাগত রায় ৷ তিনি বলেন, "আচার্য বরাবর উপাচার্যের উপরেই থাকেন। কিন্তু প্রয়োজনে উপরের পদে থাকা কেউ যে অধস্তন আধিকারিকের কাজ করতে পারবেন না, তেমন কোনও বাধা কোথাও নেই। তাই যা রাজ্যপাল করেছেন সেটা ঠিকই করেছেন।"
তিনি এই বিষয় আরও বলেন, "ব্রাত্য বসু যদি অভিষেক মনু সিংভি বা আইনজীবীদের কিংবা পুজো কমিটির পিছনে খরচ করতে চান সেটা তাঁর অভিরুচি। বরং যারা দীর্ঘদিন ন্যায্য বেতন পাচ্ছেন না তাঁদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে না চান, তাহলে সেটা ওনার অভিরুচি।" রাজ্যপাল একটি সাংবিধানিক পদ। কিন্তু রাজ্যে দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমান রাজ্যপাল বিভিন্ন ইস্যুতেই পথে নামছেন ৷ যা নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তীব্র কটাক্ষও করেছে ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নজিরবিহীনভাবে রাজভবনে পিস রুম খুলেছিলেন রাজ্যপাল। এই অতি-সক্রিয়তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন রকম চর্চাও চলছে। এই বিষয় তথাগত রায় বলেন, "যখন রাজ্যের নির্বাচিত সরকার তার নিজের কাজ করছে না, তার জায়গায় রাজ্যপালকে ময়দানে নেমে কাজ করতে হচ্ছে ৷ রাজ্যপাল হিসেবে সৌভাগ্যক্রমে আমাকে এই ধরনের সক্রিয় ভূমিকা কখনও নিতে হয়নি। তবে অরুণাচল প্রদেশে অল্প দিনের জন্য আমি যখন রাজ্যপালের ভূমিকায় থেকেছি তখন আমাকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় রাজ্যের নির্বাচিত সরকার যখন নিজের কাজ করছে না তখন রাজ্যপালকে এই ধরনের ভূমিকা পালন করতে হতেই পারে।"
শাসকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে বর্তমান রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। এই বিষয় অবশ্য তথাগতবাবু "একেবারে মিথ্যে কথা" বলে উড়িয়ে দেন। তাঁর কথায়, "রাজ্যপাল যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন এর ফলে শাসকদল চাপে পড়ে যাচ্ছে ৷ তাই নিজেদের কোলে ঝোল টানবার জন্য এই ধরনের মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে।" অন্যদিকে, রাখির দিন এক ধাক্কায় 200 টাকা আর 400 টাকা কমলো এলপিজি'র দাম। এটা কি 2024 সালে লোকসভা নির্বাচনের জন্য চমক ? তথাগত রায় মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত কোনও রাজনৈতিক গিমিক নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কমেছে রান্নার গ্যাসের দাম।
আরও পড়ুন: 8 সদস্যের কমিটি গঠন, 'এক দেশ এক ভোট' নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে চায় কেন্দ্র !
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তৎপর। তা নিয়ে তথাগত রায় বলেন, "দেশের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে মঙ্গলজনক হবে। সংবিধান প্রণেতারা আর্টিকেল 44-এ এই বিষয় নিয়ে দেশের তৎপর হওয়া উচিত সেই পরামর্শ দিয়ে গেছেন। অভিন্ন ফৌজদারি বিধি থাকলে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি কেন থাকবে না?" সম্প্রতি 'ইন্ডিয়া' জোটের থার্ড মেগা বৈঠক হলো। এই জোট কতটা প্রভাব পড়বে এনডিএ-র উপর ? তথাগত রায় বলেন, "ইন্ডিয়া জোট কি এখনও তাদের লোগো ঠিক করতে পেরেছে ? তারা কি তাদের কমিটির আহ্বায়ক ঠিক করতে পেরেছে ? প্রধানমন্ত্রী কে হবে সেই মুখ ঠিক করতে পেরেছে? তাহলে তারা মুম্বইতে বসে কী করছে ? তাহলে কি শুধু মুম্বইতে মজা করতে গেছেন ! কিন্তু এতজন সরকারি টাকা খরচ করে ওখানে গিয়ে কী করতে পারলেন ?"