কলকাতা,9 জানুয়ারি : লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডিজেলের দাম । তাই খরচ সামলাতে বাস মালিকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবার থেকে ডিজেল নয় কেরোসিনেই বাস চালানো হবে । এর ফলে বাতাসে যেমন বিষাক্ত ধুলিকনার পরিমান বাড়বে, তেমনই তা ক্ষতি করবে বাসের যন্ত্রাংশেরও । এমনটাই জানাচ্ছেন পরিবেশবিদ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।
অগ্নিমূল্য জ্বালানি। বর্তমানে জ্বালানির দাম যে জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে তার ফলে এক্কেবারে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বেসরকারি ও মিনি মালিকদের। কিন্তু বাস না চললে সংসার চলবে কি করে? তাই এবার বিকল্প পথ অবলম্বন করল বেশ কিছু বাস মালিক। ডিজেলের সঙ্গে কেরোসিন ও মোবিল মিশিয়ে বেশ কয়েকটি রুটে চালানো হচ্ছে বেসরকারি বাস। যদিও কেরোসিনে বাস চালানো বেআইনি । তবে খরচের খাড়া ঘাড়ে ঝুলছে মালিকদের। তাই প্রাণ বাঁচাতে এবার এই পন্থাই বেছে নিয়েছেন তাঁরা । বর্তমানে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম 80 টাকা । অন্যদিকে লিটার প্রতি কেরোসিনের দাম 60 টাকা । আর একটি বাসে প্রতিদিন ডিজেল লাগে গড়ে 50 লিটার । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিক বলেন যে, "বাস না চালালে খাবো কী ? জ্বালানির দাম বেড়ে আকাশছোঁয়া । অন্যদিকে করোনা আবহে বাসে যাত্রী হচ্ছে না বলেই চলে । খরচ বাঁচাতেই ডিজেলের পরিবর্তে কেরোসিন ব্যবহার করতে হচ্ছে । "
আরও পড়ুন:এক ক্লিকেই বুক করা যাবে বাস-ট্রাম-লঞ্চের সিট, উদ্যোগ ডব্লিউবিটিসি-র
ওয়েস্টবেঙ্গল বাস এন্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন যে, "শহর ও শহরতলীর বেশ কয়েকটি রুটে এই ভাবে বাস চালাচ্ছেন বেশ কিছু বাস মালিকরা। তবে কলকাতা শহরের ভিতরে কেরোসিন তেল সরবরাহ শহরতলীর তুলনায় কম বলে এখানে খুব একটা কেরোসিন তেলে বাঁচাবার সুযোগ থাকে না। জেলার ছোট ছোট রুটগুলিতে জ্বালানির দাম কুলতে না পেরে মালিকরা কেরোসিনে বাস চালাতে বাধ্য হচ্ছে । গাড়িরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে । তবে পেট চালাতে তাঁরা জেনে শুনে বেআইনী কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।"
পরিবেশবীদ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন যে, "যতদিন এভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকবে ততদিন ভেজাল বা মিশ্রিত তেলের কারবার ফুলে ফেঁপে উঠবে । এর ফলে যেমন বায়ুদূষণ হবে তেমনই বায়ুজনিত বিভিন্ন রোগ যেমন শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগের সমস্যা ও ফুসফুসের সমস্যাও বাড়তে থাকবে।"
একই মত পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তেরও। তিনি বলেন যে, "জ্বালানির দাম বেশি বলে কেরোসিন দিয়ে বাস চলবে সেটা হতে পারে না । অবশ্যই জ্বালানির দামে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। তাই এই বিষয় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত । পাশাপাশি এটা পরিবেশের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকারক ।"