কলকাতা, 22 অগাস্ট: রীতিমতো অভিনব কায়দা ৷ পাট গাছের আড়ালে ছিল বস্তা ভরতি ইলিশ মাছ। উপর থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই। মনে হবে পাটগাছ পঁচতে দেওয়া হয়েছে । সেগুলিকে বাঁশ দিয়ে ঠেলে ঠেলে ভারতের দিকে নিয়ে আসছিল কয়েকজন। কিন্তু খবর ছিল BSF-র কাছে। গঙ্গায় সক্রিয় হয়েছে পাচারকারীরা। স্পিডবোট নিয়ে BSF পৌঁছে যায় সেখানে। কিন্তু তার আগে গঙ্গার পাড়ে পাট ক্ষেতের সুযোগ নিয়ে পালায় পাচারকারী দল। উদ্ধার হয়েছে 600কেজি বাংলাদেশি ইলিশ। যার বাজার দর 9 লাখ 60 হাজার টাকা।
বর্ষার ঝিম ঝিম বৃষ্টিতে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা। বাঙালির রসনায় সে যেন অমৃত। সঙ্গে ইলিশ ভাপা, বেগুন ইলিশ, ইলিশের পাতুরি জমিয়ে দেয় বাঙালির ভুরিভোজ। কিন্তু এবার মধ্যবিত্তের নাগালের নেই ইলিশ। সেভাবে ইলিশ জালে পড়ছে না দীঘা অথবা নামখানায়। ফলে কলকাতায় ইলিশের কেজি দেড় থেকে 2000 টাকা। এদিকে সরকারিভাবে বাংলাদেশ পাঠাচ্ছে না ইলিশ। অথচ এপার বাংলায় তার চাহিদা তুঙ্গে। তিস্তার জলবণ্টন বিতর্কের জেরে এদেশে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করেছে হাসিনা সরকার। সেটা 2012 সালের 30 জুলাই।
2015 সালের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন। পরে তিনি রাজ্য বিধানসভায় বলেছিলেন, "বাংলাদেশকে আমরা তিস্তার জল দিতে পারিনি। তাই ওরা আমাদের ইলিশ মাছ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।" অবশ্য গত বছর দুর্গা পুজোর সময় কলকাতায় 500 টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু সেই শেষ। তারপর আর সরকারিভাবে সে দেশের ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে আসেনি। অথচ বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা পশ্চিমবঙ্গে প্রবল। সেই সূত্রেই সক্রিয় পাচারকারীরা। ইলিশ যোগান দিতে আজ চারভদ্র বর্ডার আউটপোস্ট দিয়ে ইলিশ মাছ এদেশে ঢুকানোর চেষ্টা করছিল তারা । গঙ্গা নদীর এই এলাকাটি ফরাজিপারা বর্ডার আউটপোস্টেরও কাছে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আজ দুপুর দুটো নাগাদ BSF চার থেকে পাঁচ জনের একটি দলের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখতে পায় গঙ্গায়। তারা পাট গাছের একটি বড়সড় বান্ডিল বাঁশ দিয়ে টেনে ভারতের দিকে আনার চেষ্টা করছিল। সেখানে পৌঁছে যায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। তারপর সেই পাটের বান্ডিল খুলতেই বেরিয়ে পড়ে বস্তা বস্তা ইলিশ। উদ্ধার হওয়া ইলিশ কাস্টমসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।