কলকাতা, 30 নভেম্বর: 2016 সালের প্রাথমিক নিয়োগে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল সেটা আদৌ প্যানেল কি না, তাই আদালতে জানাতে ব্যর্থ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। এই বিষয়ে জানাতে তিনি আদালতের কাছে ফের সময় চাইলেন। আর তার জেরেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, "এইভাবে মামলার শুনানি চলতে থাকলে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা বিচার পাবে কবে ?" 12 ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে জানাতে হবে 2016 সালে নিয়োগের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল সেটা প্যানেল কি না, এই মর্মে নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি ৷
সিবিআই তাদের তদন্তে 96 জন প্রার্থীর খোঁজ দিয়েছিল যাদের বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল তারা। তাদের নথি-সহ প্রাথমিক শিক্ষা দফতর ডেকেছিল এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে। তার মধ্যে 95 জন হাজির হয়েছিল পর্ষদের অফিসে। দেখা যায় এর মধ্যে 94 জন টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কোনও প্রমান দেখাতে পারেননি। 2014 সালের টেট পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হয়নি। এদের চাকরি অবিলম্বে বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা। সেই পদে মেরিট অনুযায়ী নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি। কিন্তু ওই 94 জনের নাম তালিকায় ছিল কি না, তা জানার জন্য আগে তালিকা খতিয়ে দেখতে হবে।
পাশাপাশি আরও 944 জনকে শূন্যপদের থেকে বেশি নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আগে 2016 সালের প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। কারণ হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আগেই প্যানেল প্রকাশ করেছে বলে জানায় ডিভিশন বেঞ্চ। যে প্যানেল তাদের ওয়েবসাইটে রয়েছে। কিন্তু সেটা প্যানেল কি না, সেটাই এদিন স্পষ্ট করতে পারেননি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী।
এদিন শুনানিতে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আইনজীবী সুদীপ্ত দাসগুপ্ত বলেন, "প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনও প্যানেল প্রকাশ করা হয়নি। বোর্ডের বক্তব্য তারা আগেই প্যানেল প্রকাশ করেছে। কত শূন্যপদ ছিল এবং কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে তা জানার জন্য প্যানেল প্রকাশ করা প্রয়োজন।" আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, "944 জনকে অতিরিক্ত নিয়োগ করা হয়। কিন্তু তারা এখনও চাকরি করছেন।" অন্যদিকে, আইনজীবী সপ্তাংশু বসু জানিয়েছেন, যে 94 জনের চাকরি গিয়েছে ইতিমধ্যে তাদের তরফে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
অন্যদিকে, তিনি আরও সওয়াল করে বলেন, "আদালত কি কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিতে পারে, অপর পক্ষের বক্তব্য না জেনেই ! এখনও সমস্ত বিষয় তদন্ত সাপেক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হলো ? চার বছর ধরে চাকরি করছে এরা। হঠাৎ করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যায় ? যদি বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আইনজীবীরা জানান, প্রাথমিক বোর্ড আগেই জানিয়েছে এদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছিল না।"
আরও পড়ুন