কলকাতা, 6 অক্টোবর: বিধাননগর পুলিশ (Bidhannagar Police) পারলেও পারে না কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)! বেড়েই চলেছে কলকাতায় অপরাধ চক্র । তা সাইবার অপরাধ হোক বা খুনের চেষ্টা, গুলি চালানো বা গুলিবর্ষণ । অনেকেই বলছেন, সমাজের এই অপরাধ মেটানোর জন্য শুধু পুলিশকেই যে সামনে এগিয়ে আসতে হয় তেমনটা নয় ৷ পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে সাধারণ মানুষকেও । যেটা ইতিমধ্যেই করতে পেরেছে বিধাননগর পুলিশ ।
সামাজিক মেলবন্ধন, আবাসিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং মাসিক বৈঠক করা-সহ অনেক দিক থেকে কলকাতা পুলিশের থেকে এগিয়ে রয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট । বিধাননগর সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনস্থ প্রত্যেকটি থানায় মাসিক একটি করে বৈঠক করা হয় । সেই বৈঠকে মূলত থাকেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি আইসি-রা এবং থাকেন এলাকার আবাসনগুলোর সেক্রেটারি এবং আবাসিকরা ।
সেই সব বৈঠকের বিষয়, পুলিশের সম্পর্কে আবাসিকদের কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না ? আবাসনগুলোর সিসিটিভি ঠিক রয়েছে কি না ? এলাকায় পার্কিং জনিত কোনও সমস্যা রয়েছে কি না ? রাতে শহরের রাস্তায় পুলিশি ব্যবস্থা ঠিক থাকে কি না ? আবাসিকদের কাছ থেকে সব অভাব অভিযোগ শুনে পুলিশ আধিকারিকরা সেই মতো ব্যবস্থা নেন । এর ফলে সামাজিক মেলবন্ধন যেমন বজায় থাকে, ঠিক সেই রকম এলাকার সমস্ত কিছু আইন-শৃঙ্খলা স্থানীয় থানার হাতের মুঠোয় থাকে । এর ফলেই এলাকায় অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়েছে ।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro : সপ্তমী থেকে নবমী মধ্যরাত পর্যন্ত চালু থাকবে কলকাতার মেট্রো
বিধাননগর সিটি পুলিশে এই ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পালন করা হলেও পালন করা হয় না কলকাতা পুলিশ অধীনস্থ থানাগুলিতে । তা আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছে হরিদেবপুর থেকে জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেফতার হওয়ার খবর সামনে আসা থেকে শুরু করে নিউমার্কেট থানা এলাকার একাধিক ছোট খাটো হোটেলে আত্মহত্যা এবং খুনের ঘটনা সামনে আসা ।
যদিও এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, বিধাননগর, হাওড়া এবং ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের তুলনা করলে ভুল হবে । এর কারণ উপরিউক্ত কমিশনারেটগুলি নতুন । পাশাপাশি তাদের এলাকার আয়তন কলকাতা পুলিশ এলাকার তুলনায় যথেষ্ট কম ।
আরও পড়ুন : Mahalaya : বীরেনবাবু দেরিতে পৌঁছনোয় মহালয়ার দায়িত্ব সামলেছিলেন নাজির আহমেদ
তাছাড়াও আইন-শৃঙ্খলার ডিউটিতে অনেক গুণ এগিয়ে রয়েছে কলকাতা পুলিশ । কারণ কলকাতা পুলিশ প্রতিটি থানা এলাকায় নিত্যদিনই মিটিং-মিছিলের ঘটনা ঘটেই থাকে ৷ ফলে সেখানে বিশাল সংখ্যক পুলিশ মজুত রাখতে হয় । ফলে সময় করে প্রত্যেকটি আবাসনের আবাসিকদের সঙ্গে বৈঠক এক প্রকার মুশকিল । তাছাড়াও কলকাতা পুলিশের এলাকায় কোন কোন নতুন হোটেল এবং আবাসন গড়ে উঠছে এবং কোন বাড়িতে কারা আসছে এবং কোন ভাড়াটিয়ারা নতুন করে বসবাস শুরু করছে, সেই সমস্ত খবর এসে পৌঁছয় না স্থানীয় থানার কাছে । এতেই একটি বড়সড় ব্যবধান থেকে যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশ কর্তৃপক্ষের । তার ফলে ক্রমশ বেড়ে চলে অপরাধের গতি । যদিও এই বিষয়ে কথা বলার জন্য কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি ।
আরও পড়ুন : Road Repairs In West Bengal: পুজোর আগে রাস্তা মেরামতিতে 200 কোটি টাকা বরাদ্দ রাজ্যের