ETV Bharat / state

CV Ananda Bose: রাজ্যপালের হাতে খড়ি নিয়ে মতভেদ বিজেপিতে, গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ তৃণমূলের - বিজেপি

আগামিকাল সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) ৷ তাই ওইদিন হাতেখড়ি দেবেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ কারণ, তিনি বাংলা শিখতে আগ্রহী ৷ এই নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে ৷ গেরুয়া শিবিরকে তাই কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷

CV Ananda Bose
CV Ananda Bose
author img

By

Published : Jan 25, 2023, 6:39 PM IST

কলকাতা, 25 জানুয়ারি: বাংলা শিখতে আগ্রহী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Bengal Governor CV Ananda Bose) ৷ সেই কারণে আগামিকাল সরস্বতী পুজো উপলক্ষে হাতেখড়ি দেবেন তিনি ৷ রাজ্যপালের এই পদক্ষেপকে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) স্বাগত জানিয়েছে ৷ কিন্তু বিজেপির (BJP) অন্দরে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে ৷ স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যপালের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন ৷ আবার দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) স্বপন দাশগুপ্তের মন্তব্যের পালটা সমালোচনা করেছেন ৷ অন্যদিকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার রাজ্যপালের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন ৷ আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছে তৃণমূল ৷

রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত মঙ্গলবার এই নিয়ে বলেছেন, ‘‘একজন বয়স্ক মানুষ বাংলা শিখছেন । খুবই ভালো কথা । কিন্তু এটার মধ্যে একটা রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে । এই বার্তাটা হল, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে সবই যেন ঠিক আছে । অথচ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রটা ঠিক নেই । দুর্নীতির কথা তো বলাই হয়েছে । গোটা শিক্ষা দফতরটা এখন প্রায় জেলে । এরকম একটা সময়ে হাতেখড়ি নেওয়াটা একটা দেখনদারি বলে মনে হচ্ছে । এটা একটা স্টান্ট । এই স্টান্টের মধ্যে রাজ্যপালের পড়া উচিত নয় । উনি এখানে একটা বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন ।’’

স্বপন দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের একটা জটিল সমস্যা রয়েছে । রাজ্যপাল নিজে সেই সমস্যা কিছুটা অনুভব করেছেন । ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখতে যে কমিটি রাজ্যে এসেছিল, সেখানে উনি ছিলেন । অন্য রাজ্যের থেকে এরাজ্যের সমস্যা কিছুটা আলাদা । হাতেখড়ি কেন ! হাতেখড়ি নিয়ে যা হচ্ছে, তা একপ্রকার নাটক । এ জিনিস কোনও রাজ্যপালকে মানায় না ।’’

স্বপন দাশগুপ্তের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে । এদিন স্বপন দাশগুপ্তের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কে থাকল তার উপর যদি কমফোর্ট আনকমফোর্ট নির্ভর করে, তাহলে রাজনীতিটাই ঢিলা হয়ে যাবে । বিরোধী রাজনৈতিক দলকে লড়াই করতে হবে, তার নিজস্ব জায়গা করতে হবে । সব সময় সরকারের ভুল ধরতে হবে ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে না তো সরকারের না বিরোধীর কারো সংঘাত থাকা উচিত নয় । এটা সাংবিধানিক পদ এখানে যাঁরা বসেন, তাঁরা যথেষ্ট যোগ্য ব্যক্তি । রাজ্যপালের কাছে কিছু দাবি থাকতেই পারে । তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুলে দলের মধ্যেই মতামত দেওয়া ভালো ।’’ তিনি এও বলেছেন, ‘‘কে কী বলছে জানি না । এটা দেখার জন্য দিল্লিতে লোক আছে । কিছু বলার থাকলে সেখানেই বলা উচিত ।’’

এদিকে বুধবার বিজেপির অন্দরে এই অস্বস্তির মধ্যেই রাজ্যপালের হাতেখড়ি নেওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার । সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর আগেই কথা হয়েছিল । তিনি বাংলা ভাষা শিখতে আগ্রহী । বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর এই ভালোবাসাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে । একই সঙ্গে তিনিও বলেন, ‘‘আমি আশা করি আগামিদিনে রাজ্যের সংস্কারে রাজ্যপালের ভূমিকা থাকবে । আগামিদিনে উনি অনেক ইতিবাচক কাজ করবেন বলে আমার ধারণা । কে কী বলছেন আমি জানি না৷ আগামিদিনে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে । আজকের যিনি রাজ্যপাল, আমি আশা করছি আগামিদিনে তিনি মহাভারতের কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করবেন ।’’

এদিকে এই নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেন । এদিন তিনি বলেন, ‘‘অতীতের এক রাজ্যপালের মতো ভূমিকায় বর্তমান রাজ্যপালকে দেখা যাচ্ছে না বলেই বিজেপির এত গাত্রদাহ । একটা সময় রাজভবন থেকে বিজেপির কার্যালয়ের মতো আচরণ করা হচ্ছিল । কিন্তু বর্তমান রাজ্যপাল নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করছেন । রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলছেন ৷ এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না গেরুয়া শিবির ।’’

তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ’’রাজ্যপালের পদ নিয়ে ছেলেখেলা বিজেপিই শুরু করেছে । অতএব তাদেরই এই ছেলেখেলা শেষ করতে হবে । রাজ্যপাল এই পদকে ছেলেখেলার পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য দায়ী ভূতপূর্ব এক রাজ্যপাল এবং তৎকালীন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন বিজেপি নেতা । তাঁরা রাজভবনকে বিজেপির দ্বিতীয় পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন । সেই অভ্যাসটা এখনও সকলের যায়নি । তাই তারা এই ধরনের কথা বলছেন । বর্তমান রাজ্যপাল নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চাইছেন তাতে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির ।’’

আরও পড়ুন: বাংলা শিখতে রাজ্যপালের হাতেখড়িকে তামাশা বলছে সিপিএম, স্বাগত জানাল বিজেপি-কংগ্রেস

কলকাতা, 25 জানুয়ারি: বাংলা শিখতে আগ্রহী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Bengal Governor CV Ananda Bose) ৷ সেই কারণে আগামিকাল সরস্বতী পুজো উপলক্ষে হাতেখড়ি দেবেন তিনি ৷ রাজ্যপালের এই পদক্ষেপকে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) স্বাগত জানিয়েছে ৷ কিন্তু বিজেপির (BJP) অন্দরে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে ৷ স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যপালের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন ৷ আবার দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) স্বপন দাশগুপ্তের মন্তব্যের পালটা সমালোচনা করেছেন ৷ অন্যদিকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার রাজ্যপালের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন ৷ আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছে তৃণমূল ৷

রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত মঙ্গলবার এই নিয়ে বলেছেন, ‘‘একজন বয়স্ক মানুষ বাংলা শিখছেন । খুবই ভালো কথা । কিন্তু এটার মধ্যে একটা রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে । এই বার্তাটা হল, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে সবই যেন ঠিক আছে । অথচ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রটা ঠিক নেই । দুর্নীতির কথা তো বলাই হয়েছে । গোটা শিক্ষা দফতরটা এখন প্রায় জেলে । এরকম একটা সময়ে হাতেখড়ি নেওয়াটা একটা দেখনদারি বলে মনে হচ্ছে । এটা একটা স্টান্ট । এই স্টান্টের মধ্যে রাজ্যপালের পড়া উচিত নয় । উনি এখানে একটা বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন ।’’

স্বপন দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের একটা জটিল সমস্যা রয়েছে । রাজ্যপাল নিজে সেই সমস্যা কিছুটা অনুভব করেছেন । ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখতে যে কমিটি রাজ্যে এসেছিল, সেখানে উনি ছিলেন । অন্য রাজ্যের থেকে এরাজ্যের সমস্যা কিছুটা আলাদা । হাতেখড়ি কেন ! হাতেখড়ি নিয়ে যা হচ্ছে, তা একপ্রকার নাটক । এ জিনিস কোনও রাজ্যপালকে মানায় না ।’’

স্বপন দাশগুপ্তের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে । এদিন স্বপন দাশগুপ্তের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কে থাকল তার উপর যদি কমফোর্ট আনকমফোর্ট নির্ভর করে, তাহলে রাজনীতিটাই ঢিলা হয়ে যাবে । বিরোধী রাজনৈতিক দলকে লড়াই করতে হবে, তার নিজস্ব জায়গা করতে হবে । সব সময় সরকারের ভুল ধরতে হবে ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে না তো সরকারের না বিরোধীর কারো সংঘাত থাকা উচিত নয় । এটা সাংবিধানিক পদ এখানে যাঁরা বসেন, তাঁরা যথেষ্ট যোগ্য ব্যক্তি । রাজ্যপালের কাছে কিছু দাবি থাকতেই পারে । তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুলে দলের মধ্যেই মতামত দেওয়া ভালো ।’’ তিনি এও বলেছেন, ‘‘কে কী বলছে জানি না । এটা দেখার জন্য দিল্লিতে লোক আছে । কিছু বলার থাকলে সেখানেই বলা উচিত ।’’

এদিকে বুধবার বিজেপির অন্দরে এই অস্বস্তির মধ্যেই রাজ্যপালের হাতেখড়ি নেওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার । সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর আগেই কথা হয়েছিল । তিনি বাংলা ভাষা শিখতে আগ্রহী । বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর এই ভালোবাসাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে । একই সঙ্গে তিনিও বলেন, ‘‘আমি আশা করি আগামিদিনে রাজ্যের সংস্কারে রাজ্যপালের ভূমিকা থাকবে । আগামিদিনে উনি অনেক ইতিবাচক কাজ করবেন বলে আমার ধারণা । কে কী বলছেন আমি জানি না৷ আগামিদিনে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে । আজকের যিনি রাজ্যপাল, আমি আশা করছি আগামিদিনে তিনি মহাভারতের কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করবেন ।’’

এদিকে এই নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেন । এদিন তিনি বলেন, ‘‘অতীতের এক রাজ্যপালের মতো ভূমিকায় বর্তমান রাজ্যপালকে দেখা যাচ্ছে না বলেই বিজেপির এত গাত্রদাহ । একটা সময় রাজভবন থেকে বিজেপির কার্যালয়ের মতো আচরণ করা হচ্ছিল । কিন্তু বর্তমান রাজ্যপাল নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করছেন । রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলছেন ৷ এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না গেরুয়া শিবির ।’’

তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ’’রাজ্যপালের পদ নিয়ে ছেলেখেলা বিজেপিই শুরু করেছে । অতএব তাদেরই এই ছেলেখেলা শেষ করতে হবে । রাজ্যপাল এই পদকে ছেলেখেলার পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য দায়ী ভূতপূর্ব এক রাজ্যপাল এবং তৎকালীন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন বিজেপি নেতা । তাঁরা রাজভবনকে বিজেপির দ্বিতীয় পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন । সেই অভ্যাসটা এখনও সকলের যায়নি । তাই তারা এই ধরনের কথা বলছেন । বর্তমান রাজ্যপাল নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চাইছেন তাতে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির ।’’

আরও পড়ুন: বাংলা শিখতে রাজ্যপালের হাতেখড়িকে তামাশা বলছে সিপিএম, স্বাগত জানাল বিজেপি-কংগ্রেস

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.