কলকাতা, 1 ডিসেম্বর: পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্যিক কর বিভাগ (স্টেট জিএসটি) 4 হাজার 716 কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বিশাল এক জাল জিএসটি চালানের ব়্যাকেট ধরেছে । ঘটনায় চারজন মূল অপারেটরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শুক্রবার আধিকারিকরা জানিয়েছেন। 1941 সালের পর এই দফতরের ইতিহাসে এই প্রথমবার তদন্ত ব্যুরোর অধীনে সরাসরি এরকম অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশের সাহায্য নিয়ে এই অভিযান চালানো হয় ৷
ডিরেক্টরেট অফ কমার্শিয়াল ট্যাক্সেস কমিশনার খালিদ আনোয়ার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, "দুটি চক্র জড়িত ছিল প্রায় 801 কোটি টাকার কর ফাঁকির সঙ্গে ।" অতিরিক্ত কমিশনার সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই দুটি চক্রের জালিয়াতির মোট টার্নওভারের পরিমাণ ছিল চার হাজার 716 কোটি টাকা । ফেব্রুয়ারি থেকে তদন্ত করে দেখা গিয়েছে যে, চারজন অপারেটর পশ্চিমবঙ্গে 178টি জাল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে । সরকারি কর বা রাজস্ব থেকে 801 কোটি টাকা ফাঁকি দেওয়ার জন্য জালিয়াতি করাও শুরু করে তারা। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের ।"
তিনি আরও বলেন, "দুই জেলা প্রশাসক সোমশ্রী কর এবং মধুমিতা কুণ্ডু হলেন তদন্তকারী আধিকারিক । যারা দক্ষিণবঙ্গের তদন্ত ব্যুরোর প্রায় 25 জনের একটি দল তৈরি করে এই র্যাকেটগুলির সন্ধান পেয়েছিলেন ৷ তারা দিনরাত কাজ করেছে এই চক্র খুঁজে বের করার জন্য। তদন্ত এখনও চলছে।" অপারেটররা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সামান্য নগদ বা চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোভ দেখাত । এরপরই জালিয়াতি করে তাদের প্যান, আধার এবং অন্যান্য নথি সংগ্রহ করত। সেগুলি ব্যবহার করে তারা বেশ কয়েকটি জাল সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে । জিএসটি রেজিস্ট্রিও পেয়েছে।
অতিরিক্ত কমিশনার সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, "তাদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে, অপারেটররা ভাড়া চুক্তি, বিদ্যুৎ বিল, সম্পত্তি ট্যাক্স সার্টিফিকেট, এমনকী বাড়ির মালিক এবং নোটারিদের স্বাক্ষরও জাল করেছিল। পুরো ব়্যাকেটটি ব্যাঙ্কিং চ্যানেল এবং নগদ লেনদেনের মাধ্যমেই মূলত অর্থ পাচার চালিয়েছিল ।" গ্রেফতার হওয়া একজনের জেল হেফাজতে হয়েছে, অন্য তিনজনকে অবশ্য জামিন দেওয়া হয়েছে। (পিটিআই)