কলকাতা, 21 অক্টোবর: কম খরচে রসনা তৃপ্তির অন্যতম চটপটা খাবারের নাম ফুচকা। ফুচকা শুধু বঙ্গ জীবনের অঙ্গ নয় ৷ ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে দেশের নানা প্রান্তে নানা ধরনের ফুচকা জনপ্রিয় নানা নামে ৷ এহেন ফুচকা যখন বিনামুল্যে হাতের কাছে মানুষে পায়, তাকে কি আর ছাড়া যায়? তা সে যতই কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হোক না কেন! তারই প্রমাণ মিলেছে বেহালা নূতন দলের পুজো মণ্ডপে ৷ দর্শনার্থীরা আসছেন মণ্ডপ সজ্জা দেখতে, সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন এক পিস-দু পিস ফুচকা ৷ লোভ সামলাতে না পেরে কেউ খেতে, কেউ আবার শুধুমাত্র রেপ্লিকা হিসাবে ঘরে সাজিয়ে রাখতে মণ্ডপ থেকে খুলে নিয়ে যাচ্ছেন ফুচকা ৷ দর্শকদের এমন বেআক্কেলে কাণ্ড কারখানা দেখে তিতিবিরক্ত পুজো উদ্যোক্তারা ৷
চতুর্থী থেকেই কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে মণ্ডপ দেখতে জনজোয়ার শহরবাসীর ৷ থিমের চমকে চোখ কপালে দর্শনার্থীদের ৷ প্রতিমা থেকে মণ্ডপ সজ্জায় কে কাকে চমক আরক টক্কর দেবে চলছে জোর প্রতিযোগিতা ৷ বেহালার অন্যতম পুজো করে থাকে নূতন দল ৷ এবারে তাদের থিম ছিল 'তুষ্টি'। মানুষের জীবনে তুষ্ট থাকাটা খুব জরুরি। মানুষ মন খারাপে ফুচকা খায়, মজায় থাকলে ফুচকা খায়, সর্দি হলে ফুচকা খায়, ঘুরতে বেরোলে ফুচকা খায়, শপিং-এ বেরোলেও ফুচকা খায়। সেই ভাবনা থেকেই পুজোর থিম তথা 'তুষ্টি'র রসদ হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ফুচকা। লক্ষাধিক ফুচকার ব্যবহারে তৈরি হয়েছে এই পুজো মণ্ডপটি।
অন্যদিকে, হাতের নাগালে এত ফুচকা দেখে লোভ সামলাতে পারছেন না মণ্ডপ দেখতে আসা দর্শনার্থীরা ৷ বাঙালি যেমন উৎসবপ্রিয়, তেমনিই খাদ্যপ্রাণা। তাই হাতের নাগালে ফুচকা পেয়ে তারা ছিঁড়ে নিচ্ছেন। তবে, তা তাঁরা খাচ্ছেন নাকি তা ছিঁড়ে নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন তা নিয়ে একটু ধন্দে রয়েছেন ক্লাব সদস্যরা। জনৈক ক্লাব সদস্যের কথায়, "ফুচকাগুলি যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য তাতে কেমিক্যাল দেওয়া আছে। তাই খেলে ক্ষতি হতে পারে। তাই অনবরতই মাইকে প্রচার করা হচ্ছে ফুচকায় হাত দেবেন না, ফুচকা খাবেন না। তাও বাচ্চা থেকে বড় কেউ শুনছে না। যেটুকু হাতের নাগালে পাচ্ছে তা তারা ছিঁড়ে নিচ্ছে। বড়রাও একই কাজ করছেন।"
আরও পড়ুন: স্মরণে সুকুমার রায়, নবীন পল্লীজুড়ে শুধুই 'আবোল-তাবোল'
আসলে ফুচকা নিয়ে নো কম্প্রোমাইজ। এর জন্য টাকা খরচ করতে এক পায়ে রাজি সকলে। আর সেই ফুচকা যদি পাওয়া যায় বিনে পয়সায়? তা হলে কেমন হবে ব্যাপারটা? যদি হাতের নাগালে গাছ থেকে পেড়ে পেয়ারা খাওয়ার মতো ফুচকা পেড়ে খাওয়া যায়, তা হলে কি কেউ ছেড়ে দেবে? একদমই না। আর বেহালা নূতল দল পুজো মণ্ডপে হচ্ছেও সেরকমই।তাতেই নাজেহাল অবস্থা ক্লাব কর্তৃপক্ষদের ৷