কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি: সারদা মায়ের বাড়ি দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে শিষ্যরা আসেন। তবে বাগবাজারের গঙ্গাপাড় লাগোয়া ওই বাড়ির চারপাশ ঘিরে ঘিঞ্জি বসতি এলাকা। ফলে বিদেশ থেকে আসা মানুষজন এইরকম পরিবেশকে ভালোভাবে নেন না। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন, সারদা মায়ের বাড়ি-সহ এলাকাকে একটা বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র করে তোলার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এলাকায় প্রায় 300 পরিবারকে ভাঙা টালির বাড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে ফ্ল্যাট ৷ এলাকাকে আরও নান্দনিক করে তোলা (Beautification of Mayer Bari Area)। তোরণ, আলো লাগানো। শৌচালয়-সহ আরও নানান পরিষেবা দেওয়া ৷ সেই কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে করোনাকালে থমকে গিয়েছিল ৷ আর তা ফের শুরু হতে চলেছে ৷
প্রথম ধাপে 4টি ব্লক করে 80টি পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। তবে করোনা ফলে থমকে যায় সেই উন্নয়ন যোগ্য। আর্থিক হাল খারাপ হওয়াতে এই সংস্কার কাজের ভবিষ্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড়ায়। তবে সব বাধা কাটিয়ে ফের শুরু হতে চলেছে সেই কাজ। এলাকার কাউন্সিলর বাপি ঘোষ ও রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের সদস্যরা গিয়ে বস্তিবাসীদের বলে এসেছেন মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে। তাঁদের 80টি পরিবারকে কাছেই অস্থায়ীভাবে শিফটিং দেওয়া হবে। তাদের ওই জায়গা ফাঁকা করে গড়ে তোলা হবে ফ্ল্যাট। তারপর তাঁদের সেই নতুন ফ্ল্যাটের চাবি হতে তুলে দেওয়া হবে। এই শুনে খুশি মানুষজন। তাঁরাও আশায় বুক বাঁধছেন।
তবে যতদিন না-পর্যন্ত নতুন ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে ততদিন অস্থায়ী কাঠামোতে কীভাবে কাটবে তা নিয়ে চিন্তিত বস্তিবাসী ৷ তবে চিন্তা প্রকাশ করলেও নতুন ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট খুশি তারা। স্থানীয় কাউন্সিলর বাপি ঘোষ এবিষয়ে বলেন, "15টা ব্লক করে 300 বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে 4টি ব্লক করে 80টি পরিবারকে ঘর দিয়েছি। এক একটি ব্লকে 20টি করে ফ্ল্যাট। প্রতি ফ্ল্যাটে থাকছে একটা ঘর, একটা ডাইনিং, রান্নার জায়গা ও বাথরুম। করোনার জন্য এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ৷ ফের তাঁর উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা কাজ শুরু হওয়ার জন্য।"
আরও পড়ুন: পুরোহিতের আসতে দেরি, কলকাতার এই স্কুলে শিক্ষিকারাই করলেন বাণী বন্দনা
তিনি আরও বলেন, "আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ফের 80 জনকে সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখা হবে অস্থায়ীভাবে। সেখানে ফ্ল্যাট হবে। এক বছরের মধ্যে 80টি পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। আরও 80 জনের জায়গা তৈরি করে রাখছি। 3 কোটি পাইলিং খরচ হয়েছিল। মোট 17 কোটি খরচ হবে। দু'বছরের মধ্যে করে ফেলব। রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের পক্ষে স্বামী অভিনানন্দ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কেন্দ্র বানানো। কাজ শুরু হলেও করোনার কারণে সেটা বন্ধ ছিল। এটা দ্বিতীয় দফা বলা চলে। সেটা হলে সবটাই কাজ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই 80টি পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে। তাঁদের জীবনযাত্রা এখন যা আছে তা আরও উন্নত হবে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। নিজের মাথার উপর পাকা ছাদ হবে। এটা সারদা মায়ের আশীর্বাদ।