বিধাননগর, 31 মে: তিনি বাইরন বিশ্বাসকে চেনেন ৷ একসময় বিজেপিতে যোগ দিতেও চেয়েছিলেন বর্তমান সাগরদিঘির বিধায়ক ৷ এমনটাই দাবি করলেন দিলীপ ঘোষ ৷ কিন্তু, তিনিই বাইরনকে বিজেপিতে যোগ দিতে নিষেধও করেছিলেন ৷ আজ ইকো পার্কে দাঁড়িয়ে বিজেপি সহ-সভাপতি নিজে সে কথা স্বীকারও করলেন ৷ কিন্তু, কেন ? দিলীপের দাবি, সংখ্যালঘু সমাজ থেকে উঠে আসা বাইরন বিশ্বাসকে সেই সময় বিজেপি স্বীকৃতি দিত না ৷ সেই কারণেই তিনি বাইরনকে নিষেধ করেছিলেন বিজেপিতে যোগ দিতে ৷
কংগ্রেসের টিকিটে সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন বাইরন বিশ্বাস ৷ কয়েক মাসের মধ্যে হাত ছেড়ে তিনি এখন ঘাসফুলে জায়গা করেছেন ৷ যা নিয়ে কংগ্রেস তাঁর সমালোচনায় বলেছে, বাইরন পরিচিতি পেয়েছেন তাদের জন্য ৷ সেই কংগ্রেসের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তিনি ৷ কিন্তু, রাজনীতির ময়দানে বাইরন বিশ্বাস হয়ত আরও আগেই আসতে পারতেন ৷ তাও আবার বিজেপির হাত ধরে - এমনটাই দাবি দিলীপের ।
মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে বাইরন বিশ্বাস দিলীপ ঘোষের কাছে নিজেরে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন ৷ আজ স্বয়ং দিলীপ ঘোষ নিজে সেই কথা স্বীকার করলেন ৷ জানান, বাইরন বিশ্বাসকে তিনি অনেক আগে থেকেই চেনেন ৷ একসময় দিলীপ ঘোষের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন বাইরন ৷ কিন্তু, দিলীপ ঘোষ নিজে নাকি তাঁকে রাজনীতিতে না আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, কেন ?
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির বলেন, "একসময় বিজেপি করতে চেয়েছিল ৷ আমি নিষেধ করেছিলাম ৷ বলেছিলাম তমি ব্যবসায়ী বাড়ির ছেলে ৷ বিজেপি করলে তোমার ব্যবসা করতে অসুবিধা হবে ৷ তুমি যেহেতু সংখ্যালঘু সমাজ থেকে এখন তোমাকে স্বীকৃতি দেবে না ৷" দিলীপ ঘোষের বক্তব্যেই স্পষ্ট, সেই সময় সংখ্যালঘু হওয়ায় রাজ্য বিজেপিতে স্বীকৃতি পেতেন না বাইরন ৷ তাই তাঁকে বিজেপিতে যোগ দিতে দেননি দিলীপ ৷
আরও পড়ুন: 'ভদ্রমহিলা অসত্য ভাষণে পারদর্শী', বাইরনের তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্যে সরব বিরোধীরা
যদিও, বাইরন বিশ্বাসের দলবদলকে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলেই উল্লেখ করেছেন দিলীপ ঘোষ ৷ কংগ্রেস ও বামেদের একমাত্র বিধায়ক হাতছাড়া হওয়ার নিরিখে নয় ৷ সাগরদিঘির সংখ্যালঘুরা তৃণমূলকে শিক্ষা দিতে বাইরনকে ভরসা করেছিলেন ৷ কিন্তু, বিধায়ক হওয়ার কয়েকমাসের মধ্যেই দলবদলে, তিনি সাগরদিঘির সংখ্যালঘু শ্রেণির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে মনে করেন তিনি ৷
তবে, বিশ্বাসঘাতকতার তত্ত্ব মানতে নারাজ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ তিনি জানান, বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলেই ছিলেন ৷ তিনি তৃণমূল থেকে টিকিট পাননি বলেই কংগ্রেসে গিয়েছিলেন ৷ তাঁর মতে, ‘‘বাইরন বিশ্বাসঘাতকতা করেননি ৷ ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছেন ৷’’
আরও পড়ুন: 'আমি তৃণমূলেরই লোক, জেলা থেকে কংগ্রেস মুছে যাবে', ঘাসফুলে নাম লিখিয়েই বাইরন উবাচ
অন্যদিকে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র তথা কালীঘাটের কাকুর ইডি-র হাতে গ্রেফতারি নিয়ে, নাম না করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন দিলীপ ঘোষ ৷ তাঁর কথায়, "কাকু ও জেঠুর পর এবার পিসির সময় আসছে ৷ লাইনে ভাইপোও আছে ৷" নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয় কৃষ্ণ গ্রেফতার হওয়ার পর ধীরে ধীরে আসল মাথারা ধরা পড়বেন বলে বিশ্বাস করেন দিলীপ ঘোষ ৷ এমনকি সুজন কৃষ্ণ ভদ্র যে সংস্থার পদে ছিলেন, সেই সংস্থার মাধ্যমে টাকা লেনদেন হত বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি ৷