কলকাতা, 17 অক্টোবর: এ বছরই বসেছিলেন NET পরীক্ষায় । অর্ণব দামের পর তাঁর এই চেষ্টা প্রশংসাও কুড়িয়েছিল । আর এবার 2015 সালের জেল পালানোর মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন মাওবাদী নেতা দীপক কুমার । ব্যাঙ্কশাল আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আজ এই রায় দিয়েছেন ৷
2012 সালে মাওবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দীপক । আদতে তিনি ছত্তিশগড়ের দূর্গ জেলার বাসিন্দা । বয়স 49 । একটা সময় চাকরি করতেন ভিলাই স্টিল প্ল্যান্টে । গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে জেলই ঠিকানা তাঁর । ছিলেন প্রেসিডেন্সি জেলে । 2015-র জুলাই মাসের শেষ দিকে অভিযোগ ওঠে, ডাকাতিতে অভিযুক্ত শামিম নামে এক বন্দীর সঙ্গে ছক করে জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন দীপক কুমার । জেল কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, কারারক্ষীদের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় শামিম । জেরার মুখে সে স্বীকার করে, তার সঙ্গে মাওবাদী সন্দেহে ধৃত দীপক কুমারেরও পালানোর কথা ছিল । এরপরই দীপককে স্থানান্তরিত করা হয় দমদম জেলে ।
জানা যায়, দমদম জেলে স্থানান্তরিত করার পর থেকেই পড়াশোনায় মন দেন দীপক । ইন্দিরা গান্ধি জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন প্রথম শ্রেণিতে । এখন হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করছেন । চাইছেন অধ্যাপনা করতে । তাই NET দেওয়া ।
জেল পালানোর অভিযোগে হেস্টিংস থানায় শামিম ও দীপকের বিরুদ্ধে 224, 224 ও 120 বি ধারায় মামলা রুজু করা হয় । যদিও দীপক কুমারের বক্তব্য ছিল, জেলের মধ্যে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে আন্দোলন করায়, তাকে শায়েস্তা করবার জন্য মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে । দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া চলার পর আজ বিচারক শামিম উভয়কেই বেকসুর খালাস করেছেন । এ প্রসঙ্গে APDR-এর সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য রঞ্জিত শূর বলেন, “এই রায়ে প্রমাণ হল বর্তমান সরকারের আমলে রাজনৈতিক বন্দীদের উপর কী ধরনের নির্যাতন চলছে, যেখানে ন্যায্য অধিকারের জন্য আন্দোলন করলেও তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে ।" মিথ্যা মামলার জন্য দীপক কুমারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান ।