কলকাতা, 24 জুন: রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন, এবার বাস্তবেও কার্যত তাই ঘটল ৷ পৌর নিয়োগ সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্ট জমা পড়ল দফতরে। আর সেই রিপোর্টেই স্পষ্ট, নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে ৷ অনিয়ম যে হয়েছে, এবং তা ব্যাপক স্তরেই হয়েছে রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে ৷ কিন্তু এরপর অবশ্য নিয়োগের ক্ষেত্রে পৌরসভাগুলোর 'চাপ'-এর তত্ত্ব তুলে ধরেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ৷
রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কর্মী নিয়োগে তৃতীয় পক্ষ বা এজেন্সির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই তিনি বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ অডিটের নির্দেশও দেন। পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে দফতরে। আর সেই জমা পড়া রিপোর্টে বেশ কিছু অনিয়মের কথা উঠে এসেছে। আর যা নিয়ে খোদ দফতরের মন্ত্রীর সাফাই, সব ক্ষেত্রে 100 শতাংশ নিয়ম মানা সম্ভব হয় না !
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের ভাড়া বাড়ি ও অফিসে হানা দিয়ে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সূত্রের খবর, সেখানেই এমন একাধিক তথ্য ও নথি পান ইডি আধিকারিকরা যার সঙ্গে রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত যোগ রয়েছে। এরপরই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে আবেদনও জানানো হয়, যে শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি রাজ্যের পৌর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের জন্যও তারা প্রস্তুত ৷ কিন্তু সেই তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা আটকাতে বার বার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর। তবে শেষমেষ ঠেকানো অবশ্য যায়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের পাশাপশি রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পৌর কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ অডিট করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মূলত কোন পৌরনিগমে কীভাবে নিয়োগ হয়েছে, নিয়োগে এজেন্সির ভূমিকা কী, সেই সব জানার চেষ্টা হয়েছিল দফতরের পক্ষ থেকে। সেই রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে। পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রুপ-ডি নিয়োগে এজেন্সির প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই একাধিক প্রশ্ন তোলা হয়েছে রিপোর্টে। পাশাপশি নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অনিয়ম উঠে এসেছে অভ্যন্তরীণ রিপোর্টেও। এই প্রসঙ্গে পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমি আইন ভালো করে দেখেছি ৷ এখানে তৃতীয় পক্ষের যেমন প্রয়োজন ছিল না, তেমন কোনও নিষেধও ছিল না। কীভাবে নিয়োগ হবে তা সম্পূর্ন পৌরসভাগুলোর দায়িত্বে ছিল। এবার দেখতে হবে যে তারা টেন্ডার দিয়ে সব নিয়ম মেনে করেছে কি না।"
আরও পড়ুন: কুন্তলের 'বিতর্কিত' চিঠি কাণ্ডে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের চিকিৎসককে তলব সিবিআইয়ের
একই সঙ্গে তিনি বলেন, "তৃতীয় পক্ষ কী করেছে তাদের ব্যাপার ৷ কিন্তু আমাদের পৌরসভাগুলো নিয়ম মেনেছে কি না, সেটা দেখতে হবে। সব কাজের ক্ষেত্রে 100 শতাংশ পদ্ধতি মানা সম্ভব হয় না। যখন বিতর্ক হয় তখন এসব আতস কাচের তলায় আসে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে তাই বিষয়গুলো নিয়ে হইচই হচ্ছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, যারা পৌরসভা চালায় তাদের উপর চাপ থাকে। হাজার হাজার নিয়োগ তো এইভাবে হয় না। মূলত ক্যাজুয়াল কর্মী নিয়োগে চাপ থাকে। দেখা যাক তদন্ত তো হচ্ছে।"