কলকাতা, 19 জুন : মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোর সুরক্ষায় কলকাতা পুলিশকে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তড়িঘড়ি সেই সব নির্দেশ খতিয়ে দেখে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল কলকাতা পুলিশ । সোমবার নবান্নের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিয়োগ করা হল নোডাল অফিসার । এখন থেকে কলকাতার বড় পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুরক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হল একজন করে অ্যাসিসটেন্ট কমিশনারকে । পাশাপাশি খুলে দেওয়া হল টোল ফ্রি নম্বর ।
গতকাল কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নেতৃত্বে লালবাজারে অনুষ্ঠিত হয় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক । সেখানে কলকাতা পুলিশের প্রায় সব সিনিয়র অফিসার ছিলেন । বৈঠকে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত । DC কমব্যাটকে দেওয়া হয়েছে নোডাল অফিসারের দায়িত্ব । এবার থেকে তিনি বিভিন্ন ডিভিশনের DC এবং হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিসটেন্ট কমিশনারদের সঙ্গে সমন্বয় দেখে হাসপাতালে সুরক্ষার বিষয়টি দেখভাল করবেন । একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে এবার থেকে হাসপাতালের আউটপোস্টগুলির দায়িত্বে থাকবেন অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার । লালবাজার সূত্রে খবর, অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার হিসেবে জগদীশ জানা SSKM-র, বাসুদেব ব্যানার্জি চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সুবল মণ্ডল RG কর, এমা সর্দার কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং অসীম দাস নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুরক্ষার দায়িত্বে আসছেন । পাশাপাশি মাঝে মধ্যে গন্ডগোল হওয়ার জন্য বেলেঘাটার ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং ID হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত একজন অ্যাসিসটেন্ট কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার সৌমেন ভট্টাচার্য সেই দায়িত্ব পালন করবেন । সিনিয়র এই পুলিশ কর্তাদের অভিজ্ঞতা হাসপাতালের সুরক্ষায় ভীষণভাবে কাজে দেবে বলে মনে করছে লালবাজার । বাঙুরের মতো হাসপাতালগুলি অবশ্য এখনও সামলাবেন OC-রাই । এই হাসপাতালে আউটপোস্টগুলি থেকে দু'ঘণ্টা অন্তর রিপোর্ট পাঠাতে হবে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলির সুরক্ষার জন্য নোডাল অফিসার DC কমব্যাটকে ।
লালবাজারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কথা মতো চালু করে দেওয়া হয়েছে টোল ফ্রি নম্বর । কলকাতা এলাকার হাসপাতালে অশান্তি সংক্রান্ত যে কোনও খবর পুলিশকে জানানো যাবে 18003458246 নম্বরে । এই টোল ফ্রি নম্বরটি নিয়ন্ত্রণ হবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে । এতে চিকিৎসক যদি কোনও আক্রমণের মুখে পড়েন কিংবা কোনও রোগী যদি আক্রান্ত হন সেই তথ্য জানাতে পারবেন কলকাতা পুলিশের হেড কোয়ার্টারে । একইসঙ্গে CCTV-গুলিকে ব্যাপকভাবে সক্রিয় করার কথাও ভাবা হয়েছে । প্রয়োজনে হাসপাতালগুলিতে লাগানো হবে বাড়তি CCTV । সেই ক্যামেরাগুলির আউটপুট দেওয়া থাকবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের আউটপোস্টে এবং থানায় । যাতে পুলিশ প্রতি মুহূর্তে নজরদারি চালাতে পারে । কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হবে প্রত্যেকটি হাসপাতালে প্যানিক অ্যালার্ম বটন রাখার জন্য । যাতে একটি বেল টিপলেই ইমারজেন্সি কিংবা আউটডোরের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ তৈরি হয় ।