কলকাতা, 20 জুন: রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ না করে রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে । প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি অজয় গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রয়েছে ।
মামলাকারী সনৎকুমার ঘোষ দাবি করেছেন, রাজ্যপাল যে উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ না করেই তিনি তা করেছেন । সে ক্ষেত্রে রাজ্যের আইন মানা হয়নি । নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগের যে সময়সীমা, তা অগ্রাহ্য করেই রাজ্যপাল সেই পদে নতুন করে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি ।
আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার মামলাকারীর তরফে আদালতে বলেন, রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করার বিষয়টি রাজ্য আইনসভার অন্তর্ভুক্ত একটি আইন । আইনকে বাইপাস করা হয়েছে । সরকার এদের বেতন দেয় । যদি বেআইনি নিয়োগ হয়, তাহলে এদের টাকা সরকার কীভাবে দেবে ?
রাজ্যপালের তরফে আইনজীবী জয়দীপ কর বলেন, "সরকার যে নামগুলি পাঠিয়েছিল তার মধ্যে দুজনের নাম গ্রহণ করেছিলেন রাজ্যপাল, বাকি করেননি । কেন করলেন না ? সরকার নিশ্চয় জানে কেন করা হয়নি ।" নবনিযুক্ত উপাচার্যদের তরফে বলা হয়, "রাজ্য আদালতে যে ভাবে বলতে চাইছে, মনে হচ্ছে তারা যা বলবে সবটাই মানতে হবে । কিন্তু আগের উপাচার্যদের অনেককেই অতিরিক্ত সময়ের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল । সেটা কি আইনসঙ্গত ?"
আইনজীবী কল্লোল বসু এক উপাচার্যের হয়ে এ দিন বলেন, রাজ্য যাঁদের নাম প্রস্তাব করেছিল, তাঁদের সবার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্ধারিত যোগ্যতা পুরণ হয়েছে কি না সেটা বিচার্য । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তরফে বলা হয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য করা হয়েছে যাঁকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন । যাদরপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী সৌম্য মজুমদার । ফলে তাঁদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই বলে দাবি তাঁর ।
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার সবার বক্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, "উপাচার্যদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি । তাঁদের অনুমোদন (অথোরাইজ) করা হয়েছে । কিন্তু ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্টে উপাচার্যদের নিয়োগ, তাঁদের চাকরির মেয়াদ সমস্ত কিছুই আইনে স্পষ্ট করা আছে । কিন্তু এখানে নবনিযুক্ত উপাচার্যদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তাঁরা সবাই কমপিটেন্ট (উপযুক্ত)। অতএব এই নিয়োগে রাজ্যপাল কোনও ভুল করেননি ।"
এ দিন সুদীর্ঘ শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।