কলকাতা, 28 নভেম্বর: বিজেপির অনুপম অস্বস্তি অব্যাহত ৷ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ইস্যুর পর শাহী সভায় আমন্ত্রণ না মেলায় দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা সাংসদ অনুপম হাজরা ৷ আগামিকাল বুধবার দলীয় সভা করতে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ কিন্তু সেই সভায় আমন্ত্রণ পাননি দলের অনুপম । তিনি অবশ্য সোমবার ইটিভিকে জানিয়েছেন, এটা নতুন নয় ৷ গত তিনবছরে রাজ্যস্তরের কোনও সভা বা কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ করা হয়নি তাঁকে ।
চাকরি চুরি, রেশন চুরি, 100 দিনের কাজ, বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা, প্রতি ঘরে জল, কিষাণ সম্মান, আয়ুষ্মান ভারত, আবাস যোজনায় দুর্নীতি ও বঞ্চনার প্রতিবাদে সবাইকে ধর্মতলায় সমাবেশ চত্বরে একত্রিত হওয়ার ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । রাজ্য বিজেপির সমস্ত নেতৃত্ব ছাড়াও আগামিকাল 29 নভেম্বর প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ।
তবে আবারও অনুপম হাজরার প্রেস্টিজ ফাইট সামনে এল এই সভা ঘিরে । তাঁর কথায়, "2020 সালে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে আমি নয় ডাক পাই না ৷ পেলেও একেবারে শেষের সময় পাই যখন পৌঁছনো সম্ভব নয় । রাজ্য বিজেপিতে যে অযোগ্য জেলা সভাপতিদের বসিয়ে রাখা হয়েছে, যারা সংগঠনটিকে ধ্বংস করে ফেলছেন তাঁদের কথা আমি যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরি সেটাই এদের ভয় । তাই রাজ্যে কোনও উচ্চ নেতৃত্ব এলে আমাকে সেই অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না ।"
তাঁর দাবি, যেসব পুরনো কর্মী-সমর্থক যাদের দল ব্রাত্য করেছে, কোণঠাসা করেছে এবং যাঁরা অবহেলিত তাঁদের আবার একত্রিত করার চেষ্টা চলছে । রাজ্যে যে দু'তিন জন সংগঠনটিকে চালায় তাঁদের এটা খুব সমস্যা হয়ে যাচ্ছে । তাই এখন বিভিন্ন জেলায় পুরনো এবং নতুন বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বিভেদ প্রকাশ্যে এসে পড়ছে ।
এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "এখনও পর্যন্ত 18 থেকে 19টি জেলায় প্রকাশ্যে বিক্ষোভ হয়েছে । একটা দুটো জেলা হলে মানা যায় । যখন মানুষ দীর্ঘদিন বঞ্চিত হতে হতে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে, তখন তারা প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করে । দেখা যাচ্ছে যে, যেখানে যেখানে বিক্ষোভ হয়েছে সেখানে সেখানে সংগঠনের মাথায় যারা বসে আছেন তেমন দু'তিন জনের ছবি নিয়ে প্রতিবাদ করা হয়েছে । এটা জলের মত পরিষ্কার যে কারা সংগঠনটিকে ধ্বংস করছে । কারা এই বিজেপি কার্যকর্তাদের বসিয়ে রেখেছে । এঁদের যদি কোণঠাসা করে রাখা হয় এবং এদের যদি মাঠে নামানো না যায় তাহলে অমিত শাহ যে আসনের টার্গেট দিয়েছে 35টি সেটা পাওয়া সম্ভব হবে না । আর তিনি যখন এটা করতে যাচ্ছেন তখন কয়েকজনের গাত্রদাহ হচ্ছে ৷"
বিজেপির এই মেগা সমাবেশ নিয়ে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে রাজ্য রাজনীতি । রাজ্য পুলিশ এবং গেরুয়া শিবিরের মধ্যে বিস্তর দড়ি টানাটানির পরে অবশেষে আদালতের নির্দেশে হতে চলেছে এই সমাবেশ । ইতিমধ্যেই বাসে-ট্রেনে করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই দিন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের শাহী সভায় সমবেত করতে বদ্ধপরিকর গেরুয়া শিবির ।
আরও পড়ুন :
1 ফলক বদলের নির্দেশ মমতার জয় দেখছেন চন্দ্রনাথ, বিতর্কের ইতি টানতে বললেন অনুপম
2 অনুব্রতর সঙ্গে ছবি দিয়ে গরুপাচারে অনুপমের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে পোস্টার বোলপুরে
3 কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সবটাই জানে, আগামিতে ফল দেখা যাবে; অনুপম প্রসঙ্গে বললেন সুকান্ত