কলকাতা, 21 জুন: বেশি অংকের টাকা বিনিয়োগ করলেই মিলবে মাসে 12 শতাংশেরও বেশি সুদ । মিলবে নানা অর্থনৈতিক সুবিধেও ৷ এই বলে গোটা দেশ থেকে প্রায় 70 কোটি টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ উঠল একটি সংস্থার কর্ণধারের বিরুদ্ধে । জানা গিয়েছে, এই 70 কোটি টাকার মধ্যে 27 কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে কলকাতা থেকে ।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিট থানা, শেক্সপিয়র সরণি থানা, লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা-সহ একাধিক জায়গায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । এমনকী এই সংস্থার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল । তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের অবশেষে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ।
জানা গিয়েছে, এই সংস্থাটির নাম ক্রেডফোর্ড এশিয়া । এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ওই সংস্থার এক কর্তাকে গ্রেফতার করেন, যাঁর নাম শ্রীকান্ত গুপ্ত । জানা গিয়েছে, 2021 সালের অগস্ট মাসে দক্ষিণ কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণি থানায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন এক চিকিৎসক । এর পরের মাসে দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিট থানায় একই ধরনের একটি অভিযোগ জমা পড়ে ।
জানা গিয়েছে, মূলত শহরের প্রবীণ ও ধনী ব্য়ক্তিদের টার্গেট করত অভিযুক্তরা । বলা হত, তাঁদের কোম্পানিতে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করলে, সে ক্ষেত্রে মাসে মাসে 12% এরও বেশি সুদ পাওয়া যাবে । এ ছাড়াও অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধাও পাবেন বিনিয়োগকারীরা । জানা গিয়েছে, পরবর্তীকালে সংস্থাটি আমেরিকার অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় এবং দিল্লির বিভিন্ন কর্মচারীকে তারা আমেরিকায় নিয়ে চলে যায় । এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সমান্তরাল তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ । গ্রেফতার করা হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্ণধার সঞ্জীব শুক্লাকে ।
আরও পড়ুন: 300 কোটি টাকার প্রতারণা দম্পতির, লুক-আউট নোটিশ জারি পুলিশের
যেহেতু কলকাতা পুলিশও এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে, ফলে দিল্লির তিহাড় সংশোধনাগারে গিয়ে সঞ্জীব শুক্লাকে কলকাতায় নিয়ে এসে বিস্তারিত জেরা পর্ব শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা । ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্ণধারকে নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে কলকাতা পুলিশ । তাঁকে লাগাতার জেরা করছেন গোয়েন্দারা । তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক চিটফান্ডের যোগ থাকলেও থাকতে পারে ।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক জানান, "আমরা প্রতিনিয়ত দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং আমেরিকায় ওই সংস্থার যে সব কর্মচারীরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি ।"