কলকাতা, 3 ডিসেম্বর : আসন্ন কলকাতা পৌরনিগমের ভোটকে (Kolkata Municipal Corporation Election) সামনে রেখে শনিবার বৈঠকে বসতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ৷ দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে মহারাষ্ট্র নিবাস হলে বৈঠক করবেন অভিষেক ৷
তৃণমূল সূত্রে খবর, শনিবারের এই বৈঠকে দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে ৷ কিন্তু এই বৈঠকের আগের রাতেও তৃণমূলের অন্দরের অস্বস্তি যাচ্ছে না। কারণ এই মুহূর্তে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে 68 ও 72 নম্বর ওয়ার্ড। এই দুই কেন্দ্রে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তনিমা চট্টোপাধ্যায় ৷
এই দুই কেন্দ্রের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বনাম তৃণমূল কংগ্রেস লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলা যায় ৷ 72 নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করেছে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ভাই সন্দীপ বক্সীকে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে লড়াই করছেন কলকাতা পৌরনিগমের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সচ্চিদানন্দবাবু বলছেন, 2015 সালের পরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগ নেই। দলের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করেন না। তিনি শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এলাকার মানুষের কথা ভেবে। শুক্রবার ইটিভি ভারতকে তিনি জানিয়েছেন, নিজের প্রার্থীপদ তিনি প্রত্যাহার করবেন না। তাঁর কথায়, "এতদিন পর্যন্ত যে তৃণমূল নেতারা তাঁর কোনও খোঁজ রাখতেন না, আজ তারাই ফোন করছেন । আমায় মারধর করতে পারে, অথবা পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করতে পারে। কিন্তু এতে আমার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন না।" এই নিয়ে 72 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সন্দীপরঞ্জন বক্সীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।
আরও পড়ুন : Dhankhar attacks Mamata : বাংলা গণতন্ত্রের জন্য গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে, মমতাকে তোপ রাজ্যপালের
অন্যদিকে, 68 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নিয়েও যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাও মেটার নাম নেই। যদিও ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফ থেকে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসাবে প্রতীক দেওয়া হয়েছে সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কে। তবে আগে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়-এর বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে। পরে দল সিদ্ধান্ত বদল করায় তনিমা দেবী এখন নির্দল প্রার্থী হিসেবে এখান থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাঁর তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তাঁর মূল বক্তব্য, বর্তমান তৃণমূল প্রার্থী এখানে প্রার্থী হন তা চাননি সুব্রত মুখোপাধ্যায় । তাঁর ইচ্ছেকে সম্মান দিয়েই তিনি নির্দল হয়ে লড়ছেন ৷
তৃণমূলের তরফ থেকে আগেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল, পৌরভোটে টিকিট না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ নির্দল হয়ে দাঁড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁর বিরুদ্ধে। এখন দেখার শনিবারের বৈঠকে এই দুই নির্দল প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া ব্যবস্থা তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রহণ করে কি না ৷ তবে এই অবস্থাতেও তৃণমূল নেতৃত্বকে অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছেন রতন মালাকার। 73 নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েও শুক্রবার তিনি তৃণমূল নেতৃত্বের অনুরোধে নিজের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ৷