কলকাতা, 20 এপ্রিল: বন্ধ ঘরে, বিধায়ক বা দলের নেতাদের সুপারিশে নয় ৷ রাজ্যের আসন্ন পঞ্চেয়েত নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করবেন খোদ গ্রামবাংলার মানুষ ৷ নিজেদের প্রার্থী নিজেরাই বেছে নেবেন মানুষ ৷ যাকে 'নজিরবিহীন' বলেও দাবি করলেন তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সকলকে এই 'গ্রাম বাংলার মতামত'-এ ভোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন অভিষেক ৷ যার দরুণ এবার, ভোটের আগে দু'মাস ব্যাপী প্রচারে নামছে তৃণমূল ৷
অভিষেকের কথায়, "প্রার্থী বাছাইয়ে জনতার মতামত নেওয়া হবে ৷ পঞ্চায়েতে কে প্রার্থী হবে তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ ৷ কোনও রাজনৈতিক নেতা নয় ৷ এখানে স্বজনপোষণের কোনও স্থান নেই ৷" সেইসঙ্গে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে বলে ফের একবার জোরের সঙ্গে দাবি করলেন তিনি ৷ রাজ্যের 60 হাজার গ্রামীণ বুথে কে প্রার্থী হবে তা এলাকার মানুষ ঠিক করবে, কোনও দল নয় এমনটা জানিয়ে অভিষেক এদিন দাবি করে বলেন, "পঞ্চায়েতই সমাজের শিঁড়দাড়া ৷ গণতন্ত্রে শেষ কথা বলে গণদেবতা ৷ সুতরাং মানুষ যাকে সার্টিফিকেট দেবে তাঁরাই ভোটে দাঁড়াবে ৷" সেই সঙ্গে এদিন নাম না করে বিজেপিকেও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না অভিষেক ৷ তাঁর কথায়, "ধর্মের ভিত্তিতে বা 56 ইঞ্চির ছাতির প্রেক্ষিতে ভোট দেবেন না ৷"
সম্প্রতি অতীতে বিভিন্ন সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন,পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী তাঁরাই হবে যাঁদের সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার মানুষই বেছে নেবেন। সেই লক্ষ্যেই এদিন বড়সড় পদক্ষেপ তৃণমূল কংগ্রেসের। বৃহস্পতিবার দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই মর্মে 'জনসংযোগ যাত্রা' এবং 'গ্রাম বাংলার মতামত' কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, "আগামী 25 এপ্রিল থেকে রাজ্যে জনসংযোগ যাত্রা শুরু হবে ৷" পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে মানুষের রায় নিয়েই ঠিক হবে রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েতের প্রার্থী ৷ তাঁর কথায়, "কে প্রার্থী হবে তা দলের থেকে আগে মানুষের ঠিক করা উচিত ৷ পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে রোদ, জল, ঝড়, বৃষ্টিতেও কাজ করতে হবে ৷ সেই মানসিকতা রাখতে হবে ৷" সেইসঙ্গে, ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের দাবি, প্রার্থী বাছাই বা পঞ্চায়েতের কাজে আর কোনও স্বজনপোষণ নয়, মানুষের হিতের জন্য কাজ করতে হবে সব প্রার্থীকে ৷ পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেকের সোজা সাপটা জবাব, "অন্য দলের কোনও নেতাকে মানুষ প্রার্থী করতে চাইলে তাঁর সঙ্গেও কথা বলব, আমার কোনও অহংকার নেই ৷"
আরও পড়ুন: শাহকে ফোন ইস্যুতে মমতা মামলা করুন, চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর
প্রসঙ্গত, এই কর্মসূচিকে মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে তৃণমূল। প্রথমত, জনসংযোগ যাত্রা, দ্বিতীয়ত, গ্রামবাংলার মতামত। জনসংযোগ যাত্রার আওতায় রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রতিটি জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে গিয়ে জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের নেতৃত্বের সঙ্গেও বিশেষ বৈঠক করবেন তিনি ৷ গ্রাম বাংলার মতামত কর্মসূচিতে জেলা থেকে বুথ সভাপতি এবং এলাকার বিশিষ্ট মানুষজনকে ডাকা হবে। এই ক্যাম্পে গোপন ব্যালটে পঞ্চায়েতে প্রার্থী নিয়ে মতামতও জানতে চাওয়া হবে বলে জানান তিনি। সেখানে ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবেন তাঁরা ৷