কলকাতা, 10 জানুয়ারি: গত কয়েকদিন ধরেই দলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছিল। ঘনিষ্ঠ মহলে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে তাঁর নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রেই ব্যস্ত থাকতে চান তিনি। এছাড়া দল যেখানে তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে তা তিনি পালন করবেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছিল তাহলে কি পঞ্চায়েত নির্বাচন বা তার পূর্ববর্তী সময় যেমন সক্রিয় ভূমিকায় অভিষেককে দেখা গিয়েছিল তেমনটা দেখা যাবে না। আর তাই বুধবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের দিকে সকলের চোখ ছিল।
আদৌ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আসেন কি না। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতাদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেক শুধু এলেনই না, বক্তব্যও রাখলেন। জানিয়েও দিলেন, দল যা দায়িত্ব দেবে তিনি পালন করবেন। এদিন দলের সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেক এলেও শুরু থেকে চুপচাপই ছিলেন তিনি। বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাঁ-দিকে এবং সুব্রত বক্সীর পাশে বসেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, প্রথম অবস্থায় এই বৈঠকে প্রথমে কিছু বলতে চাননি অভিষেক। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বলেন, "তুই মিটিংয়ে আছিস, কিছু তো বল।"
এই সময় অভিষেক তাঁর নবজোয়ার যাত্রা প্রসঙ্গে অভিজ্ঞতার কথা বলেন। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ এও জানান, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক। নেত্রী যা নির্দেশ দেবেন তা পালন করবেন। এদিন অভিষেকের বক্তব্যে একটা বড় অংশজুড়ে ছিল 100 দিনের কর্মীদের নিয়ে তাঁর আন্দোলন এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে গুরু দায়িত্ব দেন।
রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, অপ্রাপ্তি, বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের অপচেষ্টা, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্সংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে না-পারা, কর্পোরেট দুর্নীতি প্রভৃতি বিষয়ে একত্রিত করে একটি পুস্তিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ওই পুস্তিকায় বাংলায় তৃণমূল সরকারের সাফল্যের বিষয় এবং এলাকাভিত্তিক উন্নয়নের খতিয়ানও থাকতে পারে বলে সাজেশন দিয়েছেন তিনি। দলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে চর্চা থাকলেও এদিন দলীয় নেতাদের অভাব-অভিযোগ শোনার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সী উভয়কেই। একইসঙ্গে সূত্রের খবর, মুখপাত্র হিসাবে কাকে বেছে নেওয়া হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব এদিন দলনেত্রী মূলত সুব্রত বক্সীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দিয়েছেন। তাহলে অবশেষে কি অভিমান ভাঙল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের? এই অবস্থায় এমনই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে ৷
আরও পড়ুন: