ETV Bharat / state

৩৮ দিনের শিশুর হৃদযন্ত্রে বিরল-জটিল অস্ত্রোপচার, মিলল নবজন্ম - operation

নবজন্ম পেল দুইমাসের শিশু । জন্মের মাস খানেক পরে অসুস্থ হয় শিশুটি । হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ে তার । অবশেষে অস্ত্রপ্রচারের সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসকরা।

প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : May 16, 2019, 12:44 PM IST

কলকাতা, 16 মে : জন্মগত কারণে হৃদযন্ত্রে সমস্যা । অস্ত্রোপচারও করা হয় । কিন্তু জটিল এই অস্ত্রোপচারের পরেও 38 দিন বয়সি ওই শিশুর প্রাণসংশয় দেখা দেয় । কারণ, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল সে । শেষ পর্যন্ত অবশ্য নবজন্ম পেল শিশু । বিরল এই ঘটনা দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালের ।

এই শিশু ধানবাদের বাসিন্দা । জন্মের মাস খানেক পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে । ডিহাইড্রেশনের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট এবং শরীর নীলচে হয়ে গেছিল তার । স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে জানানো হয়, তেমন গুরুতর কোনও সমস্যা নেই । কিন্তু চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না । এরপরে, ধানবাদ থেকে সরাসরি দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে । সেখানে চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডলের অধীনে তাকে ভরতি করানো হয় । পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, জন্মগত কারণে এই শিশুটি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত । যে কারণে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

এ দিকে এই ধরনের পরিস্থিতির কারণে শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে শুরু করে শিশুর মায়ের । কারণ, এই শিশুটির আগে দুইবার সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে তাঁর সন্তান প্রসব করানো হয়েছিল । কিন্তু দু'বারই তাঁর সন্তানের মৃত্যু হয় । চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, তিনি যেন আবার গর্ভধারণ না করেন । চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আবার গর্ভধারণ করলে শিশুর মায়ের প্রাণসংশয় রয়েছে । তবে এই পরামর্শ মানেননি তিনি । এই শিশুও জন্মের কয়েকদিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে । মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তার প্রাণসংশয় দেখা দেয় ।

চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, "জন্মগত কারণে শিশুর হৃদযন্ত্রে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা 3,300 জনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে দেখা দেয় । এই ধরনের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সফল হওয়ার হারও খুব কম । তা সত্ত্বেও এই শিশুকে বাঁচাতে তার অস্ত্রোপচারের জন্য কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা । শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার সফল হয় ।" তবে সমস্যা তখনও দূর হয়নি । বরং, নতুন করে সমস্যা দেখা দেয় । তিনি বলেন, "অস্ত্রোপচারের পরে এই শিশুটিকে 16 দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল । কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়ায় ১০ দিন ডায়ালিসিস করানো হয় । শিশুটির বুকে সংক্রমণ দেখা দেয় । চিকিৎসা শুরুর ২৬ দিনের মাথায় ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে ।"

এই ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুকে যে বাঁচাতে পারবেন, তা ভাবতে পারেননি চিকিৎসকরা । অবস্থা এমন ছিল, যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যু হতে পারত । এই ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুর মায়ের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে শুরু করেছিল । তিনি সলিড খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন । এতটাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে কাউন্সেলিং করাতে হয়েছিল তাঁকে । চিকিৎসক মনোজ দাগা বলেন, "শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল, কারণ যে কোনও মুহূর্তে তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারত । সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল । ডায়ালিসিস চলছিল । এ দিকে হৃদযন্ত্রের কাজ করার ক্ষমতা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেও সমস্যা ছিল । শিশুটি যে বেঁচে উঠবে তার আশা আমরাও ছেড়ে দিয়েছিলাম । শিশুর মা-ও ধরে নিয়েছিলেন, তাঁর সন্তানকেও বাঁচানো যাবে না । শেষ পর্যন্ত নবজন্ম পেল । সফল হল বিরল এবং জটিল এই অস্ত্রোপচার ।"

বর্তমানে দুই মাসের শিশুটি এখন ভালো আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা । হাসপাতাল থেকে তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে ।

কলকাতা, 16 মে : জন্মগত কারণে হৃদযন্ত্রে সমস্যা । অস্ত্রোপচারও করা হয় । কিন্তু জটিল এই অস্ত্রোপচারের পরেও 38 দিন বয়সি ওই শিশুর প্রাণসংশয় দেখা দেয় । কারণ, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল সে । শেষ পর্যন্ত অবশ্য নবজন্ম পেল শিশু । বিরল এই ঘটনা দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালের ।

এই শিশু ধানবাদের বাসিন্দা । জন্মের মাস খানেক পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে । ডিহাইড্রেশনের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট এবং শরীর নীলচে হয়ে গেছিল তার । স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে জানানো হয়, তেমন গুরুতর কোনও সমস্যা নেই । কিন্তু চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না । এরপরে, ধানবাদ থেকে সরাসরি দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে । সেখানে চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডলের অধীনে তাকে ভরতি করানো হয় । পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, জন্মগত কারণে এই শিশুটি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত । যে কারণে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।

এ দিকে এই ধরনের পরিস্থিতির কারণে শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে শুরু করে শিশুর মায়ের । কারণ, এই শিশুটির আগে দুইবার সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে তাঁর সন্তান প্রসব করানো হয়েছিল । কিন্তু দু'বারই তাঁর সন্তানের মৃত্যু হয় । চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, তিনি যেন আবার গর্ভধারণ না করেন । চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আবার গর্ভধারণ করলে শিশুর মায়ের প্রাণসংশয় রয়েছে । তবে এই পরামর্শ মানেননি তিনি । এই শিশুও জন্মের কয়েকদিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে । মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তার প্রাণসংশয় দেখা দেয় ।

চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, "জন্মগত কারণে শিশুর হৃদযন্ত্রে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তা 3,300 জনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে দেখা দেয় । এই ধরনের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সফল হওয়ার হারও খুব কম । তা সত্ত্বেও এই শিশুকে বাঁচাতে তার অস্ত্রোপচারের জন্য কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা । শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার সফল হয় ।" তবে সমস্যা তখনও দূর হয়নি । বরং, নতুন করে সমস্যা দেখা দেয় । তিনি বলেন, "অস্ত্রোপচারের পরে এই শিশুটিকে 16 দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল । কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়ায় ১০ দিন ডায়ালিসিস করানো হয় । শিশুটির বুকে সংক্রমণ দেখা দেয় । চিকিৎসা শুরুর ২৬ দিনের মাথায় ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে ।"

এই ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুকে যে বাঁচাতে পারবেন, তা ভাবতে পারেননি চিকিৎসকরা । অবস্থা এমন ছিল, যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যু হতে পারত । এই ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুর মায়ের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে শুরু করেছিল । তিনি সলিড খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন । এতটাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে কাউন্সেলিং করাতে হয়েছিল তাঁকে । চিকিৎসক মনোজ দাগা বলেন, "শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল, কারণ যে কোনও মুহূর্তে তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারত । সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল । ডায়ালিসিস চলছিল । এ দিকে হৃদযন্ত্রের কাজ করার ক্ষমতা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেও সমস্যা ছিল । শিশুটি যে বেঁচে উঠবে তার আশা আমরাও ছেড়ে দিয়েছিলাম । শিশুর মা-ও ধরে নিয়েছিলেন, তাঁর সন্তানকেও বাঁচানো যাবে না । শেষ পর্যন্ত নবজন্ম পেল । সফল হল বিরল এবং জটিল এই অস্ত্রোপচার ।"

বর্তমানে দুই মাসের শিশুটি এখন ভালো আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা । হাসপাতাল থেকে তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে ।

Intro:কলকাতা, ১৫ মে: জন্মগত কারণে হৃদযন্ত্রে সমস্যা। যার জেরে, অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু জটিল এই অস্ত্রোপচারের পরেও ৩৮ দিন বয়সি এই শিশুর প্রাণসংশয় দেখা দেয়। কারণ, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল এই শিশু। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নবজন্ম পেল এই শিশু। বিরল এই ঘটনা দক্ষিণ কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালের।Body:এই শিশু ধানবাদের বাসিন্দা। জন্মের মাস খানেক পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে এই শিশুটি। ডিহাইড্রেশনের পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট এবং শরীর নীলচে হয়ে গিয়েছিল তার। স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে জানানো হয়, তেমন গুরুতর কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। এর পরে, ধানবাদ থেকে সরাসরি দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে। সেখানে চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডলের অধীনে তাকে ভর্তি করানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, জন্মগত কারণে এই শিশুটি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত। যে কারণে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ দিকে এই ধরনের পরিস্থিতির জেরে, শিশুটির মায়ের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে থাকে। কারণ, এই শিশুটির আগে দুইবার সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে তাঁর সন্তান প্রসব করানো হয়েছিল। কিন্তু দুই বারই সন্তানের মৃত্যু হয়। তিনি যেন আবার গর্ভধারণ না করেন, তার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, আবার গর্ভধারণ করলে এই শিশুটির মায়ের প্রাণসংশয় রয়েছে। তবে এই পরামর্শ মানেননি তিনি। এবং, মাত্র কয়েক দিনের তাঁর এই পুত্রশিশুর শারীরিক অবস্থা এমন। আর, তাঁর এই সন্তানও তখন প্রাণসংশয়ে রয়েছে।

চিকিৎসক শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, "জন্মগত কারণে এই শিশুর যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল হৃদযন্ত্রে তা ৩,৩০০ জনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে দেখা দেয়। এই ধরনের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সফল হওয়ার হারও খুব কম। তা সত্ত্বেও এই শিশুটিকে বাঁচাতে তার অস্ত্রোপচারের জন্য কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার সফল হয়।" তবে সমস্যা তখনও দূর হয়নি। বরং, নতুন করে সমস্যা দেখা দেয়। এই চিকিৎসক বলেন, "অস্ত্রোপচারের পরে এই শিশুটিকে ১৬ দিন ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল। কিডনির সমস্যা দেখা দেওয়ায় ১০ দিন ডায়ালিসিস করানো হয়। শিশুটির বুকে সংক্রমণ দেখা দেয়। চিকিৎসা শুরুর ২৬ দিনের মাথায় এই শিশুটির ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে।"
Conclusion:এই ধরনের পরিস্থিতিতে এই শিশুটিকে যে বাঁচাতে পারবেন, তা ভাবতে পারেননি চিকিৎসকরা। অবস্থা এমন ছিল, যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যু হয়ে যেতে পারত তার। এই ধরনের পরিস্থিতিতে শিশুটির মায়ের শারীরিক অবস্থারও আরও অবনতি হয়। তিনি সলিড খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন। এতটাই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে কাউন্সেলিং করাতে হয়। চিকিৎসক মনোজ দাগা বলেন, "এই শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল, কারণ যে কোনও মুহূর্তে তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারত। সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। ডায়ালাইসিস চলছিল। এ দিকে হৃদযন্ত্রের কাজ করার ক্ষমতা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেও সমস্যা ছিল। শিশুটি যে বেঁচে উঠবে তার আশা আমরাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। শিশুটির মাও ধরে নিয়েছিলেন, তাঁর এই সন্তাকেও বাঁচানো যাবে না। শেষ পর্যন্ত নবজন্ম পেল এই শিশুটি। সফল হল বিরল এবং জটিল এই অস্ত্রোপচার।" বর্তমানে মাস দুই বয়সের এই শিশুটি এখন ভালো আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল থেকে তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
_______

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.