ঝাড়গ্রাম, 26 এপ্রিল: কুড়মি সামাজিক সংগঠনের ডাকা 12 ঘণ্টা বনধের ব্যাপক বুধবার প্রভাব পড়ল ঝাড়গ্রামে । অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঝাড়গ্রামে মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী । কুড়মিদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে এই বনধ ডাকা হয়েছে ৷ পাশাপাশি আরও একাধিক দাবি রয়েছে তাদের ৷ যার মধ্যে অন্যতম হল সংশোধিত সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পাঠানো ৷ এই সমস্ত দাবিকে সামনে রেখেই জঙ্গলমহলের চার জেলা ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে সকাল ছ'টা থেকে সন্ধ্যা ছ'টা পর্যন্ত 12 ঘণ্টার বনধের ডাক দেয় কুড়মি সামাজিক সংগঠনের ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি ।
এদিন সকাল থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড় প্রায় জনশূন্য। খাঁ খাঁ করছে রাস্তাঘাট । যে রাস্তায় রোজ সকালবেলায় দূরপাল্লার বহু সরকারি এবং বেসরকারি বাস দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে কেবলমাত্র একটি সরকারি বাসকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ৷ তাও আবার রাস্তা বন্ধ থাকায় কলকাতা না গিয়ে ফিরে এসে পাঁচ মাথার মোড়ে সেটি দাঁড়িয়ে পড়ে । সরকারি বাসের কন্ডাক্টর সুনিত বিষয় বলেন, "সকালে বাস নিয়ে বেরিয়েছিলাম । কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় আবার ফিরে এসেছি । কলকাতা যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু যেতে পারিনি । বনধের জেরে সকাল থেকে এখানে কোনও বেসরকারি বাসেরও দেখা নেই । ভাবছি বাস ডিপোতে ফিরে যাব ৷"
ঝাড়গ্রাম শহরের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ ৷ সবজি বাজারেরও সিংহভাগ দোকান বন্ধ রয়েছে ৷ কেবলমাত্র মাছ বাজারের কিছুটা খোলা ছিল । শহরের সরকারি, বেসরকারি স্কুল গুলি বন্ধ । কয়েকটি স্কুলে পঠন-পাঠন চলছে বলে জানা গিয়েছে । কুড়মি সামাজিক সংগঠনের লোকেরা সরকারি অফিস, ব্যাংক-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সামাজিক সংগঠনের পতাকা বেঁধে দিয়েছে । ঝাড়গ্রাম পৌরসভার গেটে বাঁধা রয়েছে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের ঝাণ্ডা ।
ঝাড়গ্রামের পাশাপাশি বেলপাহাড়ি ,শিলদা ,বিনপুর , গিধনি,জাম্বনি গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইলেও যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে কুড়মিদের ডাকা বনধের । আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো বলেন, "এদিন সকাল থেকে বনধের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে । আমাদের দাবিগুলিকে সাধারণ মানুষ সমর্থন করছে । তাই এই বনধকেও সাধারণ মানুষ সমর্থন করেছে ৷ সেই জন্যই রাস্তাঘাট ফাঁকা রয়েছে এবং দোকানপাট বন্ধ রয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: বনধ সফল করতে চড়, অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো হল সাধারণ মানুষকে