ETV Bharat / state

Blind T-20 World Cup: ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছেন ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু, ছেলের অপেক্ষায় মা - ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু মাহাতো

ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত ৷ এই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু মাহাতো (Suvendu Mahata Indian Blind T-20 World Cup Winning Team Member) ৷ দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো সেই শুভেন্দুর অপেক্ষায় তাঁর মা এবং শালবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের কৈমা গ্রামের বাসিন্দারা ৷

jhargram-resident-suvendu-mahata-indian-blind-t-20-world-cup-winning-team-member
jhargram-resident-suvendu-mahata-indian-blind-t-20-world-cup-winning-team-member
author img

By

Published : Dec 18, 2022, 9:50 PM IST

ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছেন ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু, ছেলের অপেক্ষায় মা

ঝাড়গ্রাম, 18 ডিসেম্বর: সম্প্রতি বাংলাদেশকে হারিয়ে ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত ৷ ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ দলে ছিলেন ঝাড়গ্রাম ব্লকের শালবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের কৈমা গ্রামের বছর 25-এর শুভেন্দু মাহাতো (Jhargram Resident Suvendu Mahata) ৷ এখন ঘরের ছেলের ফেরার অপেক্ষায় তাঁর মা ৷ শুভেন্দু বাড়ি ফিরলেই বাড়িতে তৈরি হবে তাঁর পছন্দের মাংস ও পিঠে ৷ ইটিভি ভারত-কে এমনটাই জানালেন শুভেন্দু মাহাতোর মা দিপালী মাহাতো ৷

শনিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপের ফাইনাল 157 রানে জেতে ভারত ৷ যে দলের অন্যতম খেলোয়াড় রাজ্যের শুভেন্দু মাহাতো (Suvendu Mahata Indian Blind T-20 World Cup Winning Team Member) ৷ বিশ্বকাপ জয়ের পর শনিবার উৎসব পালিত হয় কৈমা গ্রামে ৷ শুভেন্দুর পরিবার-সহ গোটা গ্রাম আনন্দে আত্মহারা ৷ শুভেন্দুর মা দিপালী মাহাতো বলেন, ‘‘শুভেন্দু বলেছিল দেশের জন্য কিছু করতে হবে ৷ জিততেই হবে ৷ সে তাঁর কথা রেখেছে ৷ এর থেকে আর বড় কী পাওনা থাকতে পারে ৷’’ শুভেন্দুর পছন্দের খাবার নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখন মকর পরবের সময় চলে এসেছে ৷ শুভেন্দু মাংস-পিঠে খেতে খুব ভালোবাসে ৷ বাড়ি ফিরলেই ওর জন্য মাংস-পিঠে তৈরি করব ৷’’

এখন শুধু শুভেন্দুর বাড়িতে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার ও গ্রামবাসীরা ৷ শুভেন্দুর গ্রামবাসী শ্যামসুন্দর মাহাতো বলেন, ‘‘সবচেয়ে গর্বের বিষয় আমাদের শুভেন্দু জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলে দেশকে তিনবার বিশ্বকাপ এনে দিল ৷’’ তবে, তাঁর আক্ষেপ ব্লাইন্ড ক্রিকেটের প্রচার কম ৷ ফলে লোকজন এর সম্পর্কে জানতেও পারে না ৷

শুভেন্দু মাহাতোর জন্ম থেকেই চোখের সমস্যা ছিল ৷ তিনি চোখে অল্প দেখতে পেতেন ৷ কিন্তু, 2001 সালে সাইকেলের আঘাতে শুভেন্দুর দৃষ্টি আরও কমে যায় ৷ এইভাবে কেটে যাচ্ছিল শুভেন্দুর জীবন ৷ ছোট থেকে দুর্বলতাকে হার মানিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেন শুভেন্দু ৷ ভাগ্যের পরিহাসে 2005 সালে শুভেন্দুর দৃষ্টি সম্পূর্ণভাবে চলে যায় ৷ অন্ধকার হয়ে যায় তাঁর গোটা জগতটাই ৷ কিন্তু, শুভেন্দু নিজের মনের জোরে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ নিজের চেষ্টায় হলদিয়া চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমে (রেসিডেন্ট স্কুল ফর ব্লাইন্ড) পড়াশুনার জন্য যান ৷

আরও পড়ুন: শেষদিনে অক্ষর-কুলদীপের দাপট, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে 188 রানে জয় ভারতের

সেখানেই শুভেন্দু দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট খেলার সঙ্গে পরিচিত হন ৷ সেই শুরু, ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরও বেড়ে যায় ৷ ক্রিকেট বলের শব্দ শুনেই চার ও ছয় মারেন শুভেন্দু ৷ 2014 সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেন তিনি ৷ সেই সময় সমস্ত দৃষ্টিহীন স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে একটি রাজ্য ব্যাপী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই টুর্নামেন্টে ভালো প্রদর্শন করে শুভেন্দু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ফর ব্লাইন্ড অফ বেঙ্গল সংস্থার নজরে আসেন ৷ তারপর থেকেই বাংলা ব্লাইন্ড দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে যান শুভেন্দু মাহাতো ৷ বাংলার হয়ে তিনি বহু ম্যাচ খেলেছেন ৷ খেলার পাশাপাশি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হয়েছেন ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু মাহাতো ৷ বর্তমানে শুভেন্দু রানাঘাটের একটি বিএড কলেজে পড়াশোনা করছেন ৷

ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছেন ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু, ছেলের অপেক্ষায় মা

ঝাড়গ্রাম, 18 ডিসেম্বর: সম্প্রতি বাংলাদেশকে হারিয়ে ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত ৷ ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপ দলে ছিলেন ঝাড়গ্রাম ব্লকের শালবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের কৈমা গ্রামের বছর 25-এর শুভেন্দু মাহাতো (Jhargram Resident Suvendu Mahata) ৷ এখন ঘরের ছেলের ফেরার অপেক্ষায় তাঁর মা ৷ শুভেন্দু বাড়ি ফিরলেই বাড়িতে তৈরি হবে তাঁর পছন্দের মাংস ও পিঠে ৷ ইটিভি ভারত-কে এমনটাই জানালেন শুভেন্দু মাহাতোর মা দিপালী মাহাতো ৷

শনিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্লাইন্ড টি-20 বিশ্বকাপের ফাইনাল 157 রানে জেতে ভারত ৷ যে দলের অন্যতম খেলোয়াড় রাজ্যের শুভেন্দু মাহাতো (Suvendu Mahata Indian Blind T-20 World Cup Winning Team Member) ৷ বিশ্বকাপ জয়ের পর শনিবার উৎসব পালিত হয় কৈমা গ্রামে ৷ শুভেন্দুর পরিবার-সহ গোটা গ্রাম আনন্দে আত্মহারা ৷ শুভেন্দুর মা দিপালী মাহাতো বলেন, ‘‘শুভেন্দু বলেছিল দেশের জন্য কিছু করতে হবে ৷ জিততেই হবে ৷ সে তাঁর কথা রেখেছে ৷ এর থেকে আর বড় কী পাওনা থাকতে পারে ৷’’ শুভেন্দুর পছন্দের খাবার নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখন মকর পরবের সময় চলে এসেছে ৷ শুভেন্দু মাংস-পিঠে খেতে খুব ভালোবাসে ৷ বাড়ি ফিরলেই ওর জন্য মাংস-পিঠে তৈরি করব ৷’’

এখন শুধু শুভেন্দুর বাড়িতে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার ও গ্রামবাসীরা ৷ শুভেন্দুর গ্রামবাসী শ্যামসুন্দর মাহাতো বলেন, ‘‘সবচেয়ে গর্বের বিষয় আমাদের শুভেন্দু জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলে দেশকে তিনবার বিশ্বকাপ এনে দিল ৷’’ তবে, তাঁর আক্ষেপ ব্লাইন্ড ক্রিকেটের প্রচার কম ৷ ফলে লোকজন এর সম্পর্কে জানতেও পারে না ৷

শুভেন্দু মাহাতোর জন্ম থেকেই চোখের সমস্যা ছিল ৷ তিনি চোখে অল্প দেখতে পেতেন ৷ কিন্তু, 2001 সালে সাইকেলের আঘাতে শুভেন্দুর দৃষ্টি আরও কমে যায় ৷ এইভাবে কেটে যাচ্ছিল শুভেন্দুর জীবন ৷ ছোট থেকে দুর্বলতাকে হার মানিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেন শুভেন্দু ৷ ভাগ্যের পরিহাসে 2005 সালে শুভেন্দুর দৃষ্টি সম্পূর্ণভাবে চলে যায় ৷ অন্ধকার হয়ে যায় তাঁর গোটা জগতটাই ৷ কিন্তু, শুভেন্দু নিজের মনের জোরে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ নিজের চেষ্টায় হলদিয়া চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমে (রেসিডেন্ট স্কুল ফর ব্লাইন্ড) পড়াশুনার জন্য যান ৷

আরও পড়ুন: শেষদিনে অক্ষর-কুলদীপের দাপট, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে 188 রানে জয় ভারতের

সেখানেই শুভেন্দু দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট খেলার সঙ্গে পরিচিত হন ৷ সেই শুরু, ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আরও বেড়ে যায় ৷ ক্রিকেট বলের শব্দ শুনেই চার ও ছয় মারেন শুভেন্দু ৷ 2014 সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেন তিনি ৷ সেই সময় সমস্ত দৃষ্টিহীন স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে একটি রাজ্য ব্যাপী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই টুর্নামেন্টে ভালো প্রদর্শন করে শুভেন্দু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ফর ব্লাইন্ড অফ বেঙ্গল সংস্থার নজরে আসেন ৷ তারপর থেকেই বাংলা ব্লাইন্ড দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে যান শুভেন্দু মাহাতো ৷ বাংলার হয়ে তিনি বহু ম্যাচ খেলেছেন ৷ খেলার পাশাপাশি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হয়েছেন ঝাড়গ্রামের শুভেন্দু মাহাতো ৷ বর্তমানে শুভেন্দু রানাঘাটের একটি বিএড কলেজে পড়াশোনা করছেন ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.