ঝাড়গ্রাম, 2 অক্টোবর: সন্তান না হওয়ায় স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করত স্বামী । এমনকি একদিন মারধরের পর রাগের চোটে ওই মহিলার ফোনও ভেঙে দেয় তাঁর স্বামী । এরপরই ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল ৷ রবিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে গোপীবল্লভপুর থানার ভোলা গ্রামে। মৃত গৃহবধূর নাম প্রিয়া রানা পাল (19) ৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । তবে ওই গৃহবধূ আত্মঘাতী না খুন হয়েছেন তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 2020 সালে করোনা আবহের মধ্যেই একই পাড়ার বাসিন্দা সনাতন পালের সঙ্গে প্রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় সনাতন ও প্রিয়ার ৷ তবে বিয়ের কিছু মাস পর থেকেই ওই গৃহবধূর উপর অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ । সন্তান না হওয়ায় দিনের পর দিন অত্যাচারের পরিমাণ বাড়তে থাকে । সনাতন ছাড়াও তার মা কাননবালা পাল মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। শাশুড়ি ও স্বামীর কটূক্তির জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রিয়া।
বাপের বাড়িতে বিষয়টি জানান প্রিয়া ৷ গৃহবধূর বাবা দশরথ রানা সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন । এরপর রবিবার সকাল থেকেই ফের অশান্তি চরমে ওঠে। রবিবার বিকেলে সনাতন শ্বশুর বাড়িতে ফোন করে জানায়, ঘরের ভিতর থেকে দড়ির ফাঁসে প্রিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পরে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সোমবার ঝাড়গ্রাম পুলিশ মর্গে প্রিয়ার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। সেখানেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ি সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ট্রাংকে মিলল 3 বোনের দেহ, অনটনের জেরে খুন করে মদ্যপ বাবা !
মৃতার দাদা সুমন রানা বলেন, "সন্তান না হওয়ায় বোনকে খুব মারধর করত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। ঝুলন্ত অবস্থায় ওকে উদ্ধার করার অনেকক্ষণ পরে আমাদের জানানো হয়। এমনভাবে ওর মৃত্যু হবে ভাবতেই পারছি না। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। প্রিয়াকে খুন করাও হতে পারে। দোষীদের শাস্তি চাই ৷" মৃত গৃহবধূর মামা মলয় সাউ বলেন ,"আমার ভাগ্নিকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে । যাতে ওই ছেলেটা নতুন বিয়ে করতে পারে । দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই ৷" গোপীবল্লভপুরের এসডিপিও কৃষ্ণ গোপাল মিনা জানিয়েছেন, গৃহবধূর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে দায়ের হওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গৃহবধূর স্বামী সনাতন পালকে গ্রেফতার করা হয়েছে । গুরুত্বসহকারে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে ৷