ঝাড়গ্রাম, 26 জুন: নবজোয়ার কর্মসূচিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের উপর হামলা, মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় জামিন পেলেন কুড়মি নেতারা । সোমবার আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে ৷ জামিনে মুক্ত হলেও আপাতত অনুপ মাহাতো ছাড়া সবাইকে জেল হেফাজতে থাকতে হচ্ছে । কারণ, রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো-সহ গ্রেফতার হওয়া মোট 10 জন কুড়মি নেতা ও আন্দোলনকারীর নামে একাধিক থানার মামলা থাকায় তাঁরা আপাতত জেলে হেফাজতে থাকছেন ।
মে মাসের 26 তারিখ নবজোয়ার কর্মসূচি চলাকালীন ঝাড়গ্রাম থানার গড়শালবনি এলাকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের উপর হামলা এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ । ঘটনার রাতেই পুলিশ আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি ও শালবনি গ্রামের মনমোহিত মাহাতো, অনিত মাহাতো ও অজিত মাহাতো-সহ 4 জনকে গ্রেফতার করে । তারপরের দিন ওড়িশা বর্ডার লাগোয়া এলাকার নয়াগ্রাম থানা এলাকা থেকে কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো-সহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
পরে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে । ঘটনা তদন্তে নেমে সিআইডি আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে । ঘটনার মোট গ্রেফতার হয় 11 জন । সিআইডি রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতোকে একাধিকবার নিজেদের হেফাজতে চেয়েও তাঁদের হেফাজতে পায়নি । তবে এই প্রভাবশালী কুড়মি নেতাদের জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি ।
আরও পড়ুন: নয়া সমীকরণ! পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা কুড়মিদের
অন্যদিকে এই ঘটনায় মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি চালক ও ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূল কংগ্রেসের শহর সভাপতি নবু গোয়ালা ঝাড়গ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিল । সেই মামলাতে ধৃত কুড়মি নেতাদের গ্রেফতার দেখানোর জন্য আবেদন মঞ্জুর করেছিল আদালত । অপরদিকে জামবনি থানার আরও দু'টি মামলাতেও যুক্ত করা হয়েছিল কুড়মি নেতাদের । এছাড়াও খেমাশুলিতে রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনাতেও খড়গপুর লোকাল থানার মামলাতেও যুক্ত করা হয় কুড়মি নেতাদের ।
সিআইডি-র মামলাটি ঝাড়গ্রামের এডিজে-1 আদালতে চলছিল । সোমবার ঝাড়গ্রামের এডিজে-1 আদালত রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো, অনুপ মাহাতো-সহ মোট 11 জন কুড়মি নেতা ও আন্দোলনকারীকে শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করে । অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অশ্বিনী মণ্ডল ও তপন চৌধুরী বলেন, "এই মামলায় তদন্তে নতুন কোনও তথ্য উঠে আসেনি । মক্কেলদের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুরের আবেদন জানানো হয় । অনুপ মাহাতো অন্য কোনও মামলায় যুক্ত না থাকায় জামিন দেওয়া হোক বলে আবেদন করা হয় ।’’ সরকার পক্ষের আইনজীবী আদলতে জামিনের বিরোধিতা করে অনিল মণ্ডল বলেন, "এই মামলায় চার্জশিট এখনও জমা পড়েনি। তাই জামিন না মঞ্জুর করা হোক ৷"
উভয়পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারক 11 জন কুড়মি নেতকে শর্তাধিক জামিন মঞ্জুর করেন । এদিন ঝাড়গ্রামের সিজেএম আদালতে অনুপ মাহাতো বাদে বাকি 10 জন কুড়মি নেতা আন্দোলনকারীকে তোলা হয় । তিনটি মামলায় অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন ।
সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল বলেন , "বিচারক তিনটি মামলায় 10 জনের জামিনের আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷" এ দিন কুড়মি নেতা অনুপ মাহাতো জেল থেকে ছাড়া পেলেও রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো-সহ 10 কুড়মি নেতা ও আন্দোলনকারী জেলে থাকছেন ।’’
আরও পড়ুন: কুড়মি নেতাদের হেফাজতে নেওয়ার সিআইডির আবেদন ফের খারিজ ঝাড়গ্রাম আদালতে