জলপাইগুড়ি, 19 অগস্ট: ফের রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া ৷ অকুস্থল এবার জলপাইগুড়ি ৷ মৃতদেহ তিনদিন ধরে আগলে স্ত্রী ও মেয়ে (Wife and Daughter Was Living With Decomposed Body) ৷ দুর্গন্ধ বেরোতেই স্থানীয়রা খবর দিলেন পুলিশে ৷
জানা গিয়েছে তিস্তা ব্যারেজের কর্মরত অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বছর আশির অজিত কর্মকার বাড়িতেই থাকতেন ৷ তাঁর সঙ্গে কাউকে দেখা বা কথা বলতে দিতেন না স্ত্রী অঞ্জলি কর্মকার ও মেয়ে অনিন্দিতা কর্মকার ৷ দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং শারীরিক অত্যাচার চলত। গত তিনদিন তাঁকে দেখা যায়নি বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। শুক্রবার সকাল থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকলে (Jalpaiguri Dead Body) প্রতিবেশীরা কাউন্সিলর তারকনাথ দাসকে খবর দেন। থানায় গিয়ে পুলিশকে জানাতে গেলে তিনি দেখেন থানায় বসে রয়েছেন অজিত কর্মকারের স্ত্রী। এরপর কোতোয়ালি থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। অজিত কর্মকারের বোন গীতা কর্মকার দাদার মুখ দেখতে চাইলে আপত্তি করে মেয়ে অনিন্দিতা কর্মকার ৷ এরপরই মেয়েকে জুতোপেটা করেন পিসি ৷
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় বাড়ি থেকে চালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
কাউন্সিলর তারকনাথ দাস বলেন, "দুর্গন্ধ বেরোনোর (Decomposed Body) বিষয়টি জানাতে থানায় গিয়েছিলাম। তখনই তাঁর স্ত্রী স্বামী মারা যাওয়ার খবর জানাতে যান ৷ কাউন্সিলরের প্রাথমিক অনুমান তিনদিন ধরেই মৃতদেহ আগলে রেখেছিলেন স্ত্রী ও মেয়ে। এটা কীভাবে সম্ভব ভাবতেই অবাক লাগছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক এটাই চাই। মৃতের বোন গীতা কর্মকার অভিযোগ করেন, তাঁর দাদাকে স্ত্রী ও মেয়ে মিলে মেরে ফেলেছেন। মেয়ে বাবার উপর অত্যাচার করত। তাঁকে দাদার সঙ্গে দেখা করতে দিত না।"
অন্যদিকে মৃতের ভাইপো অমিত কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, "জ্যেঠু কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছে। আজ জ্যেঠি ওষুধ নেওয়ার জন্য বাইরে বেরিয়ে থানায় গিয়ে পুলিশকে জানিয়েছে। অনিন্দিতা দিদি জ্যেঠিকে বলেছিলেন যদি পাড়া প্রতিবেশীকে জানাও তাহলে তোমাকেও মেরে ফেলব। আমি আগেও পুলিশকে জানাতে গিয়েছিলাম পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয়নি ৷ পুলিশ যদি বিষয়টি দেখত তাহলে আজ এই দিনটা দেখতে হত না। এদিন সকালে গন্ধ বের হতেই আমাদের সন্দেহ হয়। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রবিনসন স্ট্রিটের স্মৃতি ফিরিয়ে বাবার মৃতদেহের সঙ্গে তিনমাস কাটালেন ছেলে
বাড়িতে মা ও মেয়ে দু'জনেই রয়েছে কীভাবে মারা গেল অজিত কর্মকার কোনও উত্তরই তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি কর্মকার ও মেয়ে অনিন্দিতা কর্মকার সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে যান কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার।