জলপাইগুড়ি, 4 অগস্ট: টিকাকরণের বাইরে থাকা শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের টিকাকরণ করাতে কোমর বেঁধে নামল জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আগামী 7 অগস্ট থেকে জেলা জুড়ে শুরু হতে চলছে মিশন ইন্দ্রধনুষ। এই প্রকল্পে ড্রপ আউট শিশুদের খোঁজ শুরু করছে স্বাস্থ্য দফতর । চা বাগানের মা ও শিশুদের প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পের অধীনে ৷
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় 0-2 বছরের 18409 জন শিশু টিকাকরনের বাইরে। অন্যদিকে 2652 জন গর্ভবতী মাও টিকাকরণের বাইরে রয়েছেন। জেলাজুড়ে তিনটি পর্যায়ে এই টিকাকরণ কর্মসূচি হবে। প্রথম পর্যায় শুরু হবে আগামী 7 অগস্ট ৷ চলবে 12 অগস্ট পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায় চলবে 11-16 সেপ্টেম্বর ও তৃতীয় পর্যায় 9-14 অক্টোবর টিকাকরণ কর্মসূচী চলবে বলে জানা গিয়েছে।
মোট 3336 জন ANM (Auxiliary Nurse and Midwife) বা সহায়ক নার্সদের দিয়ে এই টিকাকরণের কাজে লাগানো হবে। এই তিনটি পর্যায়ে ড্রপ আউট শিশুদের যারা পাঁচ বছরের নিচে তাদের ভ্যাক্সিন দেওয়া হবে পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদেরকেও টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: অসীম হালদার। বিশেষ করে যারা কোনও বুস্টার ডোজ, রুবেলার ভ্যাকসিন নেননি, তাঁদেরকেও টিকা দেওয়া হবে এই প্রকল্পে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: অসীম হালদার বলেন, "একটি শিশু জন্ম নেবার পরে তাকে শূন্য থেকে 5 বছর পর্যন্ত 7 প্রকার টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি বুস্টার ডোজ দেওয়া এবং ভিটামিন ওয়েল খাওয়ানো হয় শিশুদের। প্রথম থেকে এই ভ্যাক্সিন ঠিকমতো দেওয়া হলেও পরবর্তীতে রোগের টিকা গুলির ডোজ তাঁরা সঠিক ভাবে শেষ করান না। এতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এমনকী চাকুরিজীবি পরিবারের অভিভাবকরা সময়ের অভাবে টিকা দেবার জন্য সেন্টারে আসেন না।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা চাইছি সবাই ঠিকমত টিকা গুলো পাক। আমরা তিনটি পর্যায়ে জেলায় ড্রপ আউট সব শিশুদের ও গর্ভবতী মায়েদের টিকার ব্যবস্থা করেছি মিশন ইন্দ্রধনুষ প্রকল্পে। 18409 জনকে টিকা দেওয়া হবে। গর্ভবতী মা রয়েছেন 2652 জন। আমদের জেলায় যাতে একটি শিশুও টিকা থেকে বাদ না পরে সেই জন্য ঝাঁপিয়ে পরেছি । জলপাইগুড়ির পিপি ইউনিট, প্রত্যেক সাব সেন্টার, আইডিএস সেন্টার মোবাইল ইউনিটের মাধ্যমে টিকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে । চা বাগানের জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে । চা বাগানে সকালে মায়েরা কাজে যান। সেক্ষেত্রে মায়েরা যাতে তাঁদের শিশুদের সাবসেন্টারে নিয়ে আসতে পারেন, তাঁদের সুবিধা মতোই আমরা সময় নির্ধারণ করব। এই বছরে এপ্রিল মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত 7 জন মায়ের মৃত্যু হয়েছে এবং 62 জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়।
আরও পড়ুন: বেহালায় পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসের গরম শেল গাল ফুটো করল মহিলার, আজই অস্ত্রোপচার
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলায়, 18409 জন শূন্য থেকে দু'বছর বয়সি ও 2-5 বছর বয়সি 483 জন ড্রপ আউট শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সার্ভে করে এই সংখ্যাটা পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জানা গিয়েছে, গর্ভবতী মহিলাদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি সদর ও ধূপগুড়ি ব্লকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যা রয়েছে। রাজগঞ্জে 684 জন, সদর ব্লকে 522, ধূপগুড়ি ব্লকে 499 জন রয়েছেন। অন্যদিকে জেলার মধ্যে 0-2 বছর বয়সি শিশু যাদের টিকাকরণ হয়নি, সেই সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে (4366 জন) ও রাজগঞ্জ ব্লকে (4427 জন) ৷