জলপাইগুড়ি, 6 জানুয়ারি: জলপাইগুড়ির যুবকের মায়ের মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি কোথায় ছিল তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হল । সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে মহিলার মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় 5 সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ (Update on Jalpaiguri dead body carrying case) ।
বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মোটা টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছিল । কিন্তু হাসপাতাল থেকে সরকারিভাবে কেন সহযোগিতা করা হল না ওই পরিবারকে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । এই গাফিলতির খোঁজ নিতেই এবার তদন্ত কমিটি গঠন করল কর্তৃপক্ষ । শুক্রবার জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, "গতকাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছি । পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । তদন্ত কমিটিতে নার্সিং সুপার, মেডিক্যাল কলেজের প্রোফেসররা আছেন । আমরা জানার চেষ্টা করছি মৃতার পরিবার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কার কাছে গিয়েছিল । নিরাপত্তা রক্ষীরা কী করছিল । তাঁরা এই পরিবারকে সহযোগিতা করেছিল কি না । হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ কীভাবে নামানো হয়েছে, তারপর কাঁধে কে কে নিল সব কিছুই সিসিটিভির ফুটেজে দেখা হচ্ছে । ওয়ার্ড মাস্টা রের কাছে কোনও লিখিত ভাবে বা মৌখিক ভাবে কোনও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল কিনা সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: শববাহী গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, হাসপাতাল থেকে কাঁধেই মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরল ছেলে
পাশাপাশি, হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন, এবার থেকে কোনও মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বের করার আগে অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রাখতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । ওয়ার্ড থেকে নিরাপত্তারক্ষীরাই মৃতদেহ নামিয়ে তুলে দেবেন পরিবারের হাতে । সম্মানজনক অবস্থা ছাড়া কোনও মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বের করা যাবে না । এই ঘটনায় কোনও চক্রান্ত হয়েছে কি না তাও দেখা হচ্ছে । পাশাপাশি জেলাশাসককে লিখিতভাবে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের রমরমায় লাগাম টানার আবেদন করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে (Jalpaiguri man carries mother dead body on Shoulder) ।
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি মালবাজার মহকুমার ক্রান্তির ব্লকের রামপ্রসাদ দেওয়ান তাঁর মা লক্ষ্মীরানি দেওয়ানকে গত পরশু রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন চিকিৎসার জন্য । রাতেই মারা যান লক্ষ্মীরানি ৷ অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে গেলে রামপ্রসাদ দেওয়ানের কাছে 3 হাজার টাকা চাওয়া হয় ৷ কিন্তু তা তিনি দিতে পারেননি ৷ হাসপাতাল থেকে কোনও অ্যাম্বুলেন্স না-পেয়ে কাঁধে করেই মায়ের মৃতদেহ নিয়ে হাঁটা দেন তিনি (man Carries Mother Dead body) ৷ মাঝপথেই এই দৃশ্য চোখে পরে গ্রিন জলপাইগুড়ি নামক একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের । সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সংগঠনের শববাহী গাড়ি ডেকে সেই গাড়িতে মৃতদেহ ক্রান্তির উদ্যেশ্যে রওনা করিয়ে দেওয়া হয় ৷ যদিও এই ঘটনার পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ এনেছেন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা ।