জলপাইগুড়ি,27 মে: লকডাউনে কর্মহীন হয়েও পেটে গামছা বেঁধে করোনা সচেতনতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য শুভঙ্কর চক্রবর্তী। নিজের লেখা গান গেয়ে প্রচার চালাচ্ছেন শুভঙ্করবাবু। গান গেয়ে প্রচার করে মানসিক শান্তি পেলেও বাড়িতে গেলেই সংসারের অবস্থা দেখে চোখে জল আসে তাঁর। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের কাজ করে যা রোজগার হত, তাই দিয়েই সংসার চালানো ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতেন শুভঙ্কর চক্রবর্তী। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বন্ধ। এই মহামারিতে ডাক্তারবাবু ও পুলিশদের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে, এই অবস্থায় শিল্পীদের করুণ অবস্থা নিয়ে, মাস্ক পরার আবেদন নিয়ে গান বেঁধেছেন তিনি। আচমকা লকডাউনের ফলে রুটিরুজিতে টান পড়েছে। কিন্তু মাইক্রোফোন হাতে নিয়েই যাঁর সারাটা দিন কাটে, তিনি মাইক্রোফোন ছাড়েন কী করে। তাই করোনার ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গান লিখে সেই গান গেয়ে প্রচার চালাচ্ছেন শুভঙ্করবাবু। দুই ছেলেমেয়েই কলেজে পড়ে। বর্তমানে কাজ না থাকায় কোনও রোজগার নেই। ফলে পরিবারকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শুভঙ্করবাবু। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু খাবার দেওয়া হয়েছে তা দিয়েই কোনওরকমে সংসার চলছে তাঁর।
শুভঙ্করের রোগজগার নেই, সংসার চলছে না। কিন্তু তাতে বাড়িতে বসে নেই। হাসিমুখেই গান গেয়ে সাধারণ মানুষকে করোনা সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন করে চলেছেন। ময়নাগুড়ির আনন্দনগর পাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্কর অন্যান্য সময় অনুষ্ঠান সঞ্চালকের কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু এখন লকডাউনে কোনও কাজ নেই। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কাজ নেই । রোজগার বন্ধ । কয়েকদিনের জন্য বৌ-ছেলেমেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এইভাবে তো আর চলবে না। আমাকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের থেকে সাহায্য করেছে। সেই দিয়েই চলছে। কেউ যদি সাহায্য করত খুব ভালো হত। আমি নিজে গান লিখে গান গেয়ে ফিনিক্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রচার করছি। গান গেয়ে প্রচার করে মানসিক শান্তি পাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু বাড়িতে এলেই মনটা খারাপ হয়ে যায় সাংসারের অবস্থা দেখে।’’