জলপাইগুড়ি, 25 অক্টোবর : সন্ধে নেমেছে ৷ আলো-আঁধারি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বেলুন বিক্রি করছে কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা ৷ বলা ভালো বাতি বেলুন ৷ সেখান থেকে ঠিকরে আসা আলো ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে ৷ অনেকেই বেলুন কিনছে ৷ পাশ কাটিয়ে চলেও যাচ্ছে কেউ কেউ ৷ কিন্তু, বিক্রির চেষ্টার খামতি নেই ৷ ভিন রাজ্য থেকে আসা পুরুষ-মহিলারা ঘুরে ঘুরে বেলুন বিক্রি করছে ৷ পোশাক দেখেই বোঝা যায়, বাড়ি তাদের এখানে নয় ৷ সেই রাজস্থানে ৷ সেখান থেকেই এখানে এসেছে ৷ বেলুন বিক্রি করতে ৷ দীপাবলির আগে বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালোই ৷ নতুন ধরনের বেলুন হাতে পেয়ে খুশিতে চোখ ঝলমল করে উঠছে খুদেদের ৷ তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠছে ৷ কিন্তু, যারা বেলুন বিক্রি করছে তাদের কী অবস্থা ? কথা বলে জানা গেল 'কঠোর বাস্তব' ৷
![jalpaiguri](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/wb-jal-01-special-light-sale-7203427_24102019150434_2410f_01531_96.jpg)
![jalpaiguri](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/wb-jal-01-special-light-sale-7203427_24102019150433_2410f_01531_569.jpg)
মধ্যবয়স্ক আর এক বিক্রেতা জানাল, তারা দীপাবলির আনন্দে সামিল হওয়ার সুযোগ পায় না ৷ এই সময় বেলুন বিক্রির জন্য এখানে চলে আসতে হয় ৷ বউ, বাচ্চা সঙ্গে আসে ৷ কোনওরকমে মাথার ছাদ জুটিয়ে চলে বেলুন বিক্রি ৷ এখানেই কালীপুজো, দীপাবলির উৎসব দেখে ৷ তার কথায়, "দীপাবলির সময় বউ-বাচ্চাদের নিজের বাড়িতেই রাখতে চাই ৷ কিন্তু, হয়ে ওঠে না ৷ কারণ, ওরাও বেলুন বিক্রি করতে পারে ৷ তাতে দু'পয়সা বেশি রোজগার হয় ৷" "কেমন লাগে এভাবে বেলুন বিক্রি করতে ?" বলল, "এই উৎসবের সময় ভিনরাজ্যে এসে বেলুন বিক্রি করতে কার ভালো লাগে বলুন ?"
রবিবার কালীপুজো ৷ সেদিনই আলো জ্বলবে সবার বাড়িতে ৷ মোমবাতি, টুনি, প্রদীপে ঝলমল করবে বাড়ির উঠোন, রাস্তাঘাট ৷ তখনও জলপাইগুড়ির রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে বেলুন বিক্রি করবে রেখা, বিরমা, রিঙ্কুরা ৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, প্রতিবারই রাজস্থান থেকে ওরা এখানে আসে ৷ বেলুন বিক্রি করে পরিবারের সবাই ৷ দীপাবলি শেষে চলে যায় এখান থেকে ৷ পরের বার ফের আসে ৷ "এবার তো রাজস্থানে নিজের বাড়িতে দীপাবলির সময় থাকতে পারলে না ৷ আগামী বছর কি করবেন ?" প্রশ্ন শুনে বেলুন বিক্রেতা যুবক বলল,"জানা নেই কী হবে ৷ হয়তো ফের এই সময় এখানেই আসতে হবে ৷ রোজগার তো করতেই হবে ৷ না হলে বাড়ির লোকজন খাবে কি ?" হ্যাঁ, হয়তো সত্যিই আগামীবছর ওদের ফের আসতে হবে এরাজ্যে ৷ ওদের হাতে বানানো বাতি বেলুনে আলোকিত হয়ে উঠবে এখানকার অনেকের বাড়ি ৷ কিন্তু, তখন অন্ধকারে শুয়ে থাকবে দৌসার বিরমা, রিঙ্কু, জিতু, গোপালদের উঠোন ৷"