মালবাজার, 18 অক্টোবর: হড়পা বানে (Malbazar Flash Flood Accident) ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়ির মালবাজারে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) ৷ রাতে তিনি সেখানেই ছিলেন ৷ তাঁর রাত্রিবাসের জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ৷ যদিও এর মধ্যে বিতর্কের কিছু যে নেই সেই কথাই কার্যত মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
মঙ্গলবার মালবাজারের দুর্ঘটনায় (Malbazar Accident) নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং নিহতদের পরিবার ও উদ্ধারকারীদের হাতে সাহায্য তুলে দিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
তিনি জানান, মালবাজারে থাকার কোনও ভালো জায়গা নেই, তাই তিনি সোমবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ক দুলাল দাসের ফার্ম হাউজে ছিলেন ৷ মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘‘একদম থাকার কোনও জায়গা নেই ৷ ফলে আমি বাধ্য হয়ে...আর দুলালদা নিজে চলে এসেছেন...এটা আমার এমএলএ-র বাড়ি ৷ আমার জন্যই ওরা বসেছিল ৷...রাতে কীর্তন শুনে কেটে গিয়েছে ৷ তবুও তো একটা জায়গায় থাকতে হবে ৷ মেয়েরা তো রাস্তায় পড়ে থাকতে পারে না ৷’’
এই নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলে আগেই টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ৷ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, বেসরকারি একটি ফার্ম হাউজ মেরামতিতে কেন সরকারি অর্থ খরচ হবে ? সরাসরি না হলেও মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
অন্যদিকে এদিন মালবাজারে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের একজন করে সদস্যকে চাকরির অফার লেটার তুলে দেন ৷ সেখানে দু’টি বিকল্প রাখা হয়েছে ৷ কোন চাকরিতে তাঁরা যোগ দিতে চায়, সেই সিদ্ধান্তের ভার নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতেই ছেড়েছে প্রশাসন ৷
এছাড়া যাঁরা উদ্ধার করেছিলেন, সেই সাতজনকেও এদিন মঞ্চে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রীর ৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷ কে কী কাজ করেন, সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তার পর কয়েকজনকে সিভিক ভলান্টিয়ারের (Civic Volunteer) কাজের প্রতিশ্রুতি দেন ৷ কয়েকজনকে অন্য কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি ৷ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন তিনি ৷ এছাড়া ওই সাতজনকে 1 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও দেন তিনি ৷
তাছাড়া ওই হড়পা বানের দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্তের কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে, যে জল কোথা থেকে এল ৷ কারণ, প্রশাসন বিষয়টি জানত না ৷ ভুটান ও সিকিমের নদী থেকে জল ছাড়ার বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন ৷ একই সঙ্গে তিনি জানান, গোটা বিষয়টির মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে ৷ তাই এটা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ৷
আরও পড়ুন: হড়পা বানের কারণ জানতে তদন্ত চলছে, মালবাজারে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী