জলপাইগুড়ি, 1 এপ্রিল: ভিন রাজ্য থেকে চা বাগানে ফিরে আসা শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী । তাই চা বাগানে কোরোনা মোকাবিলায় জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের চা বাগানগুলির শ্রমিকদের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে বৈঠক করলেন জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অজিত রঞ্জন বর্ধন । চা বাগানের মালিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দপ্তরে বৈঠক করেন তিনি । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা শাসক অভিষেক তিওয়ারি ও জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদি । উপস্থিত ছিলেন চা বাগান মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ।
ইতিমধ্যেই কোরোনা থাবা বসিয়েছে উত্তরবঙ্গে । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের শতাধিক চা বাগানের প্রচুর শ্রমিক ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন নিজ নিজ বাগান এলাকায় । তাঁদেরকে কীভাবে রাখা হচ্ছে, তাঁদের জন্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষ তা জানতে চেয়ে চা বাগানগুলির মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনার । এই লকডাউনের সময় চা বাগানগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য় সরকারের তরফে । পাশাপাশি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চা বাগান কর্তৃপক্ষগুলিকে শুধুমাত্র সেচ ও কীটনাশক স্প্রে করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে চা বাগানগুলোতে ছাঁটাইয়ের কাজ যাতে বজায় রাখা যায় সেই নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । কারণ লকডাউন শেষ হলে চা বাগানের কাজ শুরু হবে । সেই সময় ভালো চা পাতা না হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে চা শিল্পে । তাই এখন পাতা ছাঁটার অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চা বাগান মালিকপক্ষের প্রতিনিধি অমিতাংশু চক্রবর্তী ।
বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে । শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । ভিন রাজ্য থেকে যে সমস্ত শ্রমিকরা নিজেদের চা বাগানে ফিরেছে তাদের কোনও প্রকার উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । অজিত রঞ্জন বর্ধন জানান, "আজ চা বাগান মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে । চা বাগানগুলির কী কী সমস্যা রয়েছে, কোরোনা মোকাবিলায় ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে ।"
তিনি আরও বলেন, " মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশানুসারেই এই বৈঠক হয়েছে । চা বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে একটি দাবি জানানো হয়েছে । তা হল চা গাছের বড় পাতাগুলি কাটার জন্য যেন চা বাগানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় । তাদের এই দাবি আমরা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি । সরকার অনুমতি দিলে বাগান কর্তৃপক্ষ কাজ করতে পারবে ।" চা বাগানের মালিকপক্ষের তরফে অমিতাংশ চক্রবর্তী বলেন, "আমাদের বলা হয়েছে বাইরে থেকে আসা চা শ্রমিকদের ঠিক মত দেখে রাখতে । তাদের প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠাতে হবে । সেটা আমরা আগে থেকেই করছি । আমরা শ্রমিকদের বকেয়া দিয়ে দিচ্ছি । তবে বাগান বন্ধ থাকার পর যখন ফের খোলা হবে সেই সময় একটা সমস্যা হবে । কারণ আগে আমাদের তিন মাস বাগান বন্ধ থাকার পর খুলেছিল । এখন পাতা উঠতে শুরু করেছিল । কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন ফের কাজ বন্ধ রয়েছে । এমন অবস্থায় টাকাও নেই হাতে ।"