ETV Bharat / state

Elephant: ডুয়ার্সে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে থার্মাল ডিভাইস আইডিএস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রেলের

ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর (Elephant Death) খবর প্রায়ই পাওয়া যাবে ৷ এবার তা রুখতে রেললাইনের পাশে থার্মাল ডিভাইস (Thermal Device) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিল রেল ৷

ids-system-installed-to-lower-elephant-deaths-on-railway-lines-in-north-bengal
Elephant: ডুয়ার্সে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে থার্মাল ডিভাইস আইডিএস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রেলের
author img

By

Published : Nov 29, 2022, 6:50 PM IST

জলপাইগুড়ি, 29 নভেম্বর: রেললাইনের পাশে হাতি (Elephant) এলেই জানিয়ে দেবে ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (IDS) । সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে স্টেশনের অ্যালার্ম বাজবে ৷ পাশাপাশি রেলের কন্ট্রোল রুমেও খবর পৌছে যাবে । ফলে একদিকে যেমন ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর (Elephant Death) ঘটনা কমবে, তেমনই ট্রেনও দুর্ঘটনার (Train Accident) হাত থেকে রক্ষা পাবে ।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের (North East Frontier Rail) আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের পক্ষ থেকে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । এতে খুশি বনবিভাগ ও বন্যপ্রাণী প্রেমী সংস্থাগুলিও । আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়িগামী রেলের ডুয়ার্স রুটে গরুমারা জাতীয় উদ্যান, চাপড়ামারি অভয়ারণ্য ও মহানন্দা অভয়ারণ্য রয়েছে । জঙ্গলের বুক চিরেই ট্রেন যাতায়াত করে । 2004 সালে ব্রড গেজ লাইন হওয়ার ফলে এই রুটে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু বেড়েছিল ।

যদিও করোনাকালে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু অনেকটাই কম । যদিও এর পুরো কৃতিত্ব রেল দফতরকেই দিতে হয় ৷ কারণ, রেললাইনে হাতি এলেই ট্রেন থামিয়ে হাতি তাড়িয়ে তারপর ট্রেন চালানোর ফলে হাতির মৃত্যু কমেছে । এবার রেললাইনের পাশে অপটিক ফাইবার লাগিয়ে থার্মাল ডিভাইসের (Thermal Device) মাধ্যমে হাতির গতিবিধি সম্পর্কে জানতে পারবে রেল ৷ ফলে হাতির মৃত্যু রোখা যাবে বলে দাবি রেলের ।

Elephant: ডুয়ার্সে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে থার্মাল ডিভাইস আইডিএস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রেলের

ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘেরা রেললাইনের পাশে লাগানো হচ্ছে এই ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম ৷ এটি একটি থার্মাল ডিভাইস । রেললাইনের পাশে হাতি এলে হাতির শরীর তাপমাত্রা সেন্স করবে এই ডিভাইস । সেন্স করে অপটিক ফাইবারের মাধ্যমে সেই বার্তা চলে যাবে সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে স্টেশনে । এই ডিভাইসটি রেলওয়ে লাইনের দুই পাশে 30 ফুটের মধ্যে হাতি এলেই সূচনা দেবে । হাতির অবস্থানের দুইদিকের স্টেশনের হাতির উপস্থিতির অ্যালার্ম বেজে উঠবে । পাশাপাশি রেলের ডিভিশনের কন্ট্রোল রুমেও অ্যালার্ম বাজবে ।

এর পর ট্রেন চালককে ওয়াকিটকির মাধ্যমে যেমন হাতির রেললাইনের পাশে থাকার বিষয়টি অবগত করা হবে । অন্যদিকে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ আগে থেকেই করা সম্ভব হবে । প্রাথমিক পর্যায়ে জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাগুড়ি রেলওয়ে স্টেশনকে মাঝখানে রেখে রেড ব্যাংক চা বাগানের মাঝে এই ডিভাইসটি রেখে পরীক্ষা করা হয়েছে । গরুমারা জাতীয় উদ্যানের কুনকি হাতি নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হয় ।

উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকাতে রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয় । আমরাও সবসময় রেলকে সহযোগিতা করে থাকি । আশাকরি এই ডিভাইসের ফলে আগামিদিনে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য হবে ।’’

আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দিলীপ কুমার সিং বলেন, ‘‘আমরা রাজাভাতখাওয়া থেকে শুরু করে সেবক পর্যন্ত রেলওয়ে লাইনে যেখানে হাতির করিডর (Elephant Corridor) আছে, সেখানে এই ডিভাইস লাগাবো । প্রাথমিকভাবে বিন্নাগুড়ি স্টেশনকে কেন্দ্র করে রেডব্যাংকে পরীক্ষা করা হল । আশাকরি আগামিদিনে এই ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা হাতির মৃত্যু আটকাতে পারব ।’’

এদিকে বণ্যপ্রাণী প্রেমী সংগঠন স্পোরের সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পান্ডে বলেন, ‘‘রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই । তবে এই ডিভাইস লাগালেই যে সব সমস্যার সমাধান হবে তা নয় । এখনও পর্যন্ত এই সফল হয়েছে বলা যাবে না । আশাকরি এটার ভালো দিক আমরা পাব ।’’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার রুটে 1973-2003 সাল পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছিল 53টি । 2004-2013 সাল পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছে 30টি । 2004 সালের পর মিটার গেজ লাইনটি ব্রড গেজে রূপান্তরিত হওয়ার পর ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে । হাতি ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীরও মৃত্যু হয়েছে ট্রেনের ধাক্কায় ৷ 2015-16 সালে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু কমলেও 2017 সাল থেকে ফের হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে । 2018 সালে ট্রেনের ধাক্কায় 4টি হাতির মৃত্যু হয় । 2019 সালে 3টি হাতির মৃত্যু হয় । এরপর থেকে ট্রেনের ধাক্কায় এখনও পর্যন্ত হাতির মৃত্যু হয়নি । এবার তা আরও কমবে বলে আশা সকলের ৷

আরও পড়ুন: ঘণ্টাখানেক পথ আটকে দাঁড়িয়ে রইল জখম হাতি

জলপাইগুড়ি, 29 নভেম্বর: রেললাইনের পাশে হাতি (Elephant) এলেই জানিয়ে দেবে ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (IDS) । সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে স্টেশনের অ্যালার্ম বাজবে ৷ পাশাপাশি রেলের কন্ট্রোল রুমেও খবর পৌছে যাবে । ফলে একদিকে যেমন ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর (Elephant Death) ঘটনা কমবে, তেমনই ট্রেনও দুর্ঘটনার (Train Accident) হাত থেকে রক্ষা পাবে ।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের (North East Frontier Rail) আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের পক্ষ থেকে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । এতে খুশি বনবিভাগ ও বন্যপ্রাণী প্রেমী সংস্থাগুলিও । আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়িগামী রেলের ডুয়ার্স রুটে গরুমারা জাতীয় উদ্যান, চাপড়ামারি অভয়ারণ্য ও মহানন্দা অভয়ারণ্য রয়েছে । জঙ্গলের বুক চিরেই ট্রেন যাতায়াত করে । 2004 সালে ব্রড গেজ লাইন হওয়ার ফলে এই রুটে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু বেড়েছিল ।

যদিও করোনাকালে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু অনেকটাই কম । যদিও এর পুরো কৃতিত্ব রেল দফতরকেই দিতে হয় ৷ কারণ, রেললাইনে হাতি এলেই ট্রেন থামিয়ে হাতি তাড়িয়ে তারপর ট্রেন চালানোর ফলে হাতির মৃত্যু কমেছে । এবার রেললাইনের পাশে অপটিক ফাইবার লাগিয়ে থার্মাল ডিভাইসের (Thermal Device) মাধ্যমে হাতির গতিবিধি সম্পর্কে জানতে পারবে রেল ৷ ফলে হাতির মৃত্যু রোখা যাবে বলে দাবি রেলের ।

Elephant: ডুয়ার্সে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে থার্মাল ডিভাইস আইডিএস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রেলের

ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘেরা রেললাইনের পাশে লাগানো হচ্ছে এই ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম ৷ এটি একটি থার্মাল ডিভাইস । রেললাইনের পাশে হাতি এলে হাতির শরীর তাপমাত্রা সেন্স করবে এই ডিভাইস । সেন্স করে অপটিক ফাইবারের মাধ্যমে সেই বার্তা চলে যাবে সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে স্টেশনে । এই ডিভাইসটি রেলওয়ে লাইনের দুই পাশে 30 ফুটের মধ্যে হাতি এলেই সূচনা দেবে । হাতির অবস্থানের দুইদিকের স্টেশনের হাতির উপস্থিতির অ্যালার্ম বেজে উঠবে । পাশাপাশি রেলের ডিভিশনের কন্ট্রোল রুমেও অ্যালার্ম বাজবে ।

এর পর ট্রেন চালককে ওয়াকিটকির মাধ্যমে যেমন হাতির রেললাইনের পাশে থাকার বিষয়টি অবগত করা হবে । অন্যদিকে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ আগে থেকেই করা সম্ভব হবে । প্রাথমিক পর্যায়ে জলপাইগুড়ি জেলার বিন্নাগুড়ি রেলওয়ে স্টেশনকে মাঝখানে রেখে রেড ব্যাংক চা বাগানের মাঝে এই ডিভাইসটি রেখে পরীক্ষা করা হয়েছে । গরুমারা জাতীয় উদ্যানের কুনকি হাতি নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হয় ।

উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকাতে রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয় । আমরাও সবসময় রেলকে সহযোগিতা করে থাকি । আশাকরি এই ডিভাইসের ফলে আগামিদিনে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য হবে ।’’

আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দিলীপ কুমার সিং বলেন, ‘‘আমরা রাজাভাতখাওয়া থেকে শুরু করে সেবক পর্যন্ত রেলওয়ে লাইনে যেখানে হাতির করিডর (Elephant Corridor) আছে, সেখানে এই ডিভাইস লাগাবো । প্রাথমিকভাবে বিন্নাগুড়ি স্টেশনকে কেন্দ্র করে রেডব্যাংকে পরীক্ষা করা হল । আশাকরি আগামিদিনে এই ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা হাতির মৃত্যু আটকাতে পারব ।’’

এদিকে বণ্যপ্রাণী প্রেমী সংগঠন স্পোরের সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ পান্ডে বলেন, ‘‘রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই । তবে এই ডিভাইস লাগালেই যে সব সমস্যার সমাধান হবে তা নয় । এখনও পর্যন্ত এই সফল হয়েছে বলা যাবে না । আশাকরি এটার ভালো দিক আমরা পাব ।’’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার রুটে 1973-2003 সাল পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছিল 53টি । 2004-2013 সাল পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছে 30টি । 2004 সালের পর মিটার গেজ লাইনটি ব্রড গেজে রূপান্তরিত হওয়ার পর ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে । হাতি ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীরও মৃত্যু হয়েছে ট্রেনের ধাক্কায় ৷ 2015-16 সালে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু কমলেও 2017 সাল থেকে ফের হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে । 2018 সালে ট্রেনের ধাক্কায় 4টি হাতির মৃত্যু হয় । 2019 সালে 3টি হাতির মৃত্যু হয় । এরপর থেকে ট্রেনের ধাক্কায় এখনও পর্যন্ত হাতির মৃত্যু হয়নি । এবার তা আরও কমবে বলে আশা সকলের ৷

আরও পড়ুন: ঘণ্টাখানেক পথ আটকে দাঁড়িয়ে রইল জখম হাতি

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.