জলপাইগুড়ি, 14 ডিসেম্বর: রাজ্যে এই প্রথম ৷ অর্কিড গার্ডেনের পর অর্কিড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হল জলপাইগুড়িতে। ফেস্টিভ্যালের শুরু হয়েছে বুধবার থেকে, শেষ হবে আজ ৷ অর্কিড চাষিদের উৎসাহ দিতে এবং অর্কিড সম্পর্কে আরও জানানোর জন্যই এই উদ্যোগ রাজ্য সরকারের । অর্কিড চাষ করে বিকল্প কর্মসংস্থান হতে পারে মনে করছেন আয়োজকরা ৷ গতকাল এই অর্কিড ফেস্টিভ্যালের সূচনা করেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং হর্টিকালচার দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সুব্রত গুপ্ত,উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবব্রত বসু,সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন-সহ অন্যান্যরা ।
রাজ্যের হর্টিকালচার দফতরের উদ্যোগে পুজোর আগে জলপাইগুড়ি মোহিতনগর ফার্মে পর্যটকদের জন্য অর্কিড গার্ডেন খুলে দেওয়া হয়েছিল । থাইল্যান্ড থেকে সাতরকম প্রজাতির অর্কিড এনে জলপাইগুড়িতে গড়ে তোলা হয় এই অর্কিড গার্ডেন । রাজ্য সরকার বেসরকারি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে যৌথভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছে । এরপরে ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হল ৷
জলপাইগুড়িতে দু'দিনব্যাপী এই অর্কিড ফেস্টিভ্যালে নানান প্রজাতির সেইসব অর্কিড দেখতে যেমন পারবেন, তেমনই কিনতে পারবেন পর্যটকরা । উত্তরের চাষিদের আর্থিকভাবে সাবলম্বী করা এবং অর্কিড চাষে উৎসাহিত করাই এই ফেস্টিভ্যালের লক্ষ্য । দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাহাড়ের অর্কিড চাষিরা জলপাইগুড়িতে এসেছেন এই ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে । কালিম্পংয়ের অর্কিড চাষি কল্পনা রাই ও রুত লেপচা বলেন, "এই প্রথম অর্কিড ফেস্টিভ্যালে আমরা অংশ নিলাম । খুব ভালো লাগছে আমাদের ৷ অর্কিডের মার্কেটিং হলে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অর্কিড বিক্রি যেমন করতে পারব, তাতে করে আমরা রোজগারও হবে ।"
উত্তরপূর্ব ভারতে অর্কিডের চাহিদা খুব বেশি । এছাড়াও বর্তমানে ডেকোরেশনের কাজে অর্কিডের চাহিদা রয়েছে । অর্কিডের চাহিদা অনুযায়ী যোগান দিতে চাইছে রাজ্য ৷ রাজ্যের হর্টিকালচার দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সুব্রত গুপ্তের কথায়, "উত্তরপূর্ব ভারতে অর্কিডের অনেক চাহিদা রয়েছে । আমরা মোহিতনগরে ফার্মে অর্কিড গার্ডেন পার্ক করেছি । আমরা এই প্রথমবার অর্কিড ফেস্টিভ্যাল করছি ৷ চাষিদেরকে অর্কিড চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে ।"
রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও হর্টিকালচার দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, জলপাইগুড়িতে হর্টিকালচার দফতর থেকে বেসরকারি সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে অর্কিড পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে । রাজ্যে এই প্রথম অর্কিড ফেস্টিভ্যাল করা হচ্ছে । তার পাশাপাশি চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎসাহিত করা হবে অর্কিড চাষে । এখান থেকে অর্কিড সহায়ক মূল্যে বিক্রি করা হবে ।
বেসরকারি লগ্নিকারি উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সুব্রত গুপ্তের উদ্যোগেই ট্রপিকাল অর্কিড গার্ডেন করা হয়েছে । কয়েকমাসের মধ্যেই আমরা সেটিকে একটি রূপ দিতে পেরেছি । উত্তরপূর্ব ভারতের অর্কিডের চাহিদা অনেক ৷ সেই চাহিদা পূরন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য । আমরা এখানে যেমন অর্কিড বিক্রি করব তেমনই চাষিদের অর্কিড চাষে উৎসাহিত করব । এই প্রথম রাজ্যে অর্কিড ফেস্টিভ্যাল করতে পেরে খুব ভালো লাগছে । এই বছরে আমরা থাইল্যান্ড থেকে অর্কিড গাছ এনেছি ।"
আরও পড়ুন: