জলপাইগুড়ি, 6 অক্টোবর: তিস্তা নদীতে ভেসে আসা সেনাবাহিনীর যুদ্ধে ব্যবহৃত বিস্ফোরক নিস্ক্রিয় করার কাজ শুরু করল সিআইডি-এর বম্ব স্কোয়াড ও সেনাবাহিনী। ক্রান্তীর চাপাডাঙ্গার একাধিক বাড়ি থেকে শুক্রবার বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে সেনা ও পুলিশ । এদিন ক্রান্তীর চাপাডাঙ্গা এলাকায় তিস্তা নদীর চরে ভেসে আসা বিস্ফোরকগুলোকে জেসিবি দিয়ে নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। প্রথমে 13টি সেল ফাটানো হয় পরে আরও 5টি সেলকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। চাপাডাঙ্গায় অনেক বাসিন্দার বাড়িতেই রাখা ছিল এই বিস্ফোরক। সেইসব বাড়ি থেকে উদ্ধার হল সেনাবাহিনীর যুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিস্ফোরক-সহ যন্ত্রাংশও।
বৃহস্পতিবার তিস্তা নদীতে কাঠ কুড়োতে গিয়ে নদীতে ভেসে আসা সেনাবাহিনীর যন্ত্রাংশ বাড়িতে এনে খুলতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। যন্ত্রাংশ কেটে শিশা বের করতে গিয়েই তা ফেটে মৃত্যু হয় একজনের । আহত হন আরও পাঁচজন। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের চাপাডাঙ্গা এলাকায়। সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে তিস্তা নদীতে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প ভেসে যায়। বেশ কয়েকজন সেনা জওয়ানও ভেসে যান । তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তিস্তা নদীতে সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত যুদ্ধ সামগ্রীও ভেসে আসে। বিশেষ করে মালবাজার, ক্রান্তী, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি এলাকায় নদীতে সেনার বিস্ফোরক-সহ যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলো সেনাবাহিনীই এদিন উদ্ধার করে।
চাপাডাঙ্গার বাসিন্দা তবিবর রহমান গতকাল তিস্তা নদী থেকে সেনার ব্যবহৃত কিছু বাক্স বাড়িতে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় বস্তুটিতে আঘাত করতেই তা ফেটে যায়। ঘটনায় মৃত্যু হয় সাইনুল আলম (7)। আহত হয়েছেন লতিফা খাতুন (57), লাকু মহম্মদ (14), রুকসানা পারভিন, রমজান আলি (65) ও গুমের আলি (50)। বিস্ফোরণে আহত বর্তমানে লাকু মহম্মদকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাকিদের মধ্যে গুমের আলিকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: উদ্ধারকাজ শুরু হতেই মিলল 22 দেহ, এখনও নিখোঁজ শতাধিক
তবিবরের বাড়ি থেকে যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে সেনা ও পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌছায় বম্ব স্কোয়াড। সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা ক্রান্তী ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে চাপাডাঙ্গা এলাকায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করে। জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গনপত জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। কী জিনিস ছিল সেটা সেনাবাহিনীই বলতে পারবে। তাঁর কথায়, "আগে সেনাবাহিনীর আমাদেরকে জানাক। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরাও তদন্ত করে দেখছি। গত তিনদিনে এখন পর্যন্ত 24টা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।"