জলপাইগুড়ি, 11 সেপ্টেম্বর: ঢাকে কাঠি পড়তে বাকি নেই খুব বেশি দিন ৷ পুজোর এই কটা দিন লম্বা ছুটিতে বেড়িয়েই আসতে পারেন কাছে পিঠে কোথাও ৷ নিরিবিলি প্রকৃতির কোলে বসে ওলটাতে পারেন ইতিহাসের পাতা ৷ ইতিহাস ভালবাসলে এই জায়গা আপনার কাছে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা হতেই পারে ৷ জলপাইগুড়ির গরুমারা উদ্যানের একদম বিপরীতে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হেরিটেজ বাংলোতে এবার রাত্রিনিবাস করতে পারবেন আপনিও ৷
বর্তমানে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বড়দিঘি চা বাগানের বড় বাংলো। চা বাগানের শতাব্দী প্রাচীন হেরিটেজ বাংলো গতবছর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য ৷ এখানে পর্যটকরা এলে শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে থাকার সুবিধা যেমন পাবেন, তেমনি চা বাগানের চা পাতা তোলা থেকে শুরু করে কীভাবে তৈরী হয়, তাও হাতে কলমে দেখানো হবে পর্যটকদের ৷ জানা গিয়েছে, 1858 সালে ভাইসরয় থাকাকালীন লর্ড ক্যানিং এসেছিলেন এই বাংলোতে। সে সময় ট্রেভার ছিলেন বড়দিঘি চা বাগানের ম্যানেজার। ইতিহাস বিজরিত এই বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ 'বড়া বাংলো'র পাশেই রয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যান। পাশেই বয়ে গিয়েছে মূর্তি নদী।
বড়দিঘি চা বাগানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রোহিত পারিখ বলেন, "এই হেরিটেজ বাংলোতে থেকেছেন ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং। আমাদের কাছে প্রচুর মানুষ এই হেরিটেজ বাংলোতে থাকার জন্য জানতে চেয়েছেন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আমরা। বাংলোতে 6টি ঘর রয়েছে। পর্যটকরা এলে আদিবাসী নৃত্য থেকে শুরু করে তাঁদের সব ধরনের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। একসঙ্গে অনেকে গ্রুপে এলে পিকনিক করার সুবিধা করে দেওয়া হয়।"
রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজবিন্দর সিং বলেন, "রাজ্য সরকারের চা ও পর্যটন শিল্প নীতিকে কাজে লাগিয়েই আমরা বাগানে চা ও পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছি। অনেকের শহরের কোলাহল থেকে একটু নিশ্চিন্তে থাকতে পছন্দ করেন ৷ তাই আমরা রাজ্য সরকারের টি-ট্যুরিজম প্রকল্পের মধ্যে এই হেরিটেজ বাংলোটিকে রেখেছি। নিরিবিলিতে হেরিটেজ বাংলোতে থাকতে পারবেন পর্যটকরা। পর্যটকদের জন্য সুইমিং পুলেরও ব্যবস্থা করা রয়েছে ৷"
বাগান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ডেইসি রাজ সিং ও ললিতা শর্মা জানান, পর্যটকরা সব জায়গায় ঘুরে বেড়ালেও চা বাগানের হেরিটেজ বাংলোতে থাকার মজা এখানে পাবেন। নিরিবিলিতে থাকার জন্য এই জায়গা আদর্শ। এবার পুজোয় এই বাংলোতে থাকার চাহিদা অনেক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চা বাগান, জঙ্গল, নদী সবটাই পাবেন পর্যটকরা।
আসাম থেকে আসা পর্যটক নমিতা চক্রবর্তী জানান, আমার খুব পছন্দের এই বড়দিঘি চা বাগানের বাংলোটি। আগেও এখানে এসেছি। বাগানের এসে ভালো একটা পরিবেশ পাওয়া যায়।
শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি শহর থেকে বাসে করে ছাত্র-ছাত্রী ও পর্যটকদের বড়দিঘি চা বাগানে নিয়ে যাওয়া হবে। শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে ব্রেকফাস্ট করিয়েই ঘুরে দেখানো হবে চা ফ্যাক্টরি ৷ তারপর তাঁদের গজলডোবার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে বলে এমন উদ্যোগের কথা জানান জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু ।
কীভাবে যাবেন
বিমানে গেলে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নামতে হবে ৷ সেখান থেকে সড়কপথে ক্রান্তি হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানে ৷ যদি ট্রেনে যান তাহলে মালবাজারে নেমে পড়ুন ৷ সেখান থেকে গাড়ি করে চালসা হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ বাংলো বাড়িতে ৷ যাওয়ার আগে অবশ্যই রুম বুক করে যাবেন ৷ অনলাইনে সার্চ করলেই এই বাগান বাড়ির নম্বর পেয়ে যাবেন ৷ ফোন করে নিয়ে নিতে পারেন যাবতীয় তথ্য ৷
আরও পড়ুন: পুজোর ছুটিতে আপনার অফবিট ডেস্টিনেশন হোক কালিম্পংয়ের রামধুরা