জলপাইগুড়ি, 2 মে : প্রায় দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার ভারত-ভুটান সীমান্তের চামুর্চি বাজার(Close Bhutan Gate)। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে ভারত-ভুটান সীমান্তের ভুটান গেট বন্ধ। ভুটান তাদের নিজের চাহিদা মতো রেশন সামগ্রী-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভারত থেকে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু ভুটানের কোনও নাগরিককে ভারতে আসার অনুমতি দিচ্ছে না। তার ফলে বিপাকে পড়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা ৷ কারণ ভারত-ভুটান সীমান্তের আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁ ও জলপাইগুড়ি জেলার চামুর্চি গেট দিয়েই ভুটানের নাগরিকরা ভারতে যাতায়াত করে থাকেন।
করোনার কারণে ভুটানের নাগরিকদের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ। ফলে ভুটান গেটের উপর নির্ভর করে জয়গাঁ ও চামুর্চি বাজারের ব্যবসা তলানিতে ঠেকেছে। যেখানে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হত, সেখানে ব্যবসা নেই বললেই চলে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে রয়েছে বছরের পর বছর। চামুর্চি বাজারের ব্যবসায়ী সনুকুমার মণ্ডল বলেন, "আমরা আড়াই বছর ধরে বসে আছি। কীভাবে চলছি আমরাই জানি। দিন কে দিন আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কোনওমতে চলছি। আশায় আছি কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।"
চামুর্চি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মহম্মদ লালন বলেন, "ভুটান গেটকে কেন্দ্র করেই আমাদের ব্যবসা। প্রায় তিন বছর হতে চলল ভুটান গেট বন্ধ। ভুটান তাদের চাহিদা মত ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যাচ্ছে । কিন্তু ভুটানের নাগরিকদের ভারতে আসতে দিচ্ছে না। ফলে ভুটানের নাগরিকদের উপর নির্ভর করে যারাঁ ব্যবসা করতেন, তাঁরা বিপদে পড়ে গিয়েছেন । আমাদের দেশ আনলক হলেও চামুর্চি বাজার কার্যত লকডাউন এখনও হয়ে আছে ৷ দোকানের রক্ষণাবেক্ষণ বা কর্মচারীদের বেতনের খরচ উঠছে না। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ব্যবসায়ী চামুর্চি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁরা শিলিগুড়িতে ব্যবসা নিয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা চাই খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হোক। ভুটান সুস্থ থাকলে আমরা সুস্থ থাকব।"
আরও পড়ুন : সোমবার থেকে বন্ধ শিলিগুড়ির আরও 4টি বাজার
কালচিনি বিধানসভার বিধায়ক বিশাল লামা বলেন, "আমাদের সাংসদের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি ভুটান গেট খোলার জন্য। এটা ভুটানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে জয়গাঁর বিরাট ক্ষতি হল। ইতিমধ্যেই ভুটানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে । যাতে খুব তাড়াতাড়ি ভুটান গেট খুলে যায় তার চেষ্টা আমরা করছি।’’ ভুটান গেটে যেখানে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভুটানের নাগরিকদের আনাগোনা লেগেই থাকত, সেখানে আজ শ্মশানের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। কবে ফের ভুটানের নাগরিকরা ভুটান গেট পেরিয়ে ভারতে আসবেন সেই দিকে তাকিয়ে চামুর্চির ব্যবসায়ীরা।"