জলপাইগুড়ি, 1 জানুয়ারি : দুষ্কৃতীদের সঙ্গে অন্ধকারে লড়াই করা গেলেও কুয়াশার সঙ্গে লড়াই করা বড় চ্যালেঞ্জ বিএসএফ জওয়ানদের কাছে । ঘন কুয়াশার জেরে বিপাকে পড়তে হয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিএসএফ জওয়ানদের । প্রচণ্ড কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকায় জওয়ানদের চোখে ধুলো দিয়ে সীমান্তে পাচারের কাজ চালায় দুষ্কৃতীরা । এমনকী জওয়ানদের ওপর আক্রমণও করতে পিছপা হয় না চোরাকারবারিদের দল ।
শীতের মরশুম এলে জলপাইগুড়ির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায় । কাঁটাতারের বেড়া কেটে পাচারের প্রবণতা বেড়ে যায় । এর মূল কারণ ঘন কুয়াশা । শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলা করা গেলেও প্রকৃতির সঙ্গে মোকাবিলা করা খুবই কঠিন । এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাতে এবং সকালে সীমান্তে সদা সজাগ বিএসএফ । সীমান্তে টহলদারির মাঝে কিছু সময় ফাঁকা থাকে । সেই সময়টা বেছে নেয় পাচারকারীরা । বাধা দিলেই দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে । বহুবার এমন হয়েছে যে, BSF জওয়ানদের উপর হামলা চালিয়েছে পাচারকারীরা । পালটা জওয়ানরাও গুলি চালান । সম্প্রতি 11 নভেম্বর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় এক বাংলাদেশির । অভিযোগ, কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি । অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফের গুলিতে তার মৃত্যু হয় । মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ খারিনুল রহমান । মৃত খারিনুল বাংলাদেশের নীলফামারির বাসিন্দা । ঘটনাটি ঘটে পার মেখলিগঞ্জের ভুজারিপাড়ায় । ঘন কুয়াশার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি ।
আরও পড়ুন : মুক্তিযুদ্ধের 49তম বিজয় দিবস উদযাপন বিএসএফ-এর
ঘন কুয়াশার কারণে সীমান্তে দৃশ্যমানতা কম থাকে । দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না । এইরকম পরিস্থিতিতে শীতের সময় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য বেশি সংখ্যায় বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়ে থাকে । উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলার মধ্যে 932.389 কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমানা রয়েছে । তার মধ্যে স্থলসীমা রয়েছে 879.074 কিলোমিটার । নদী-নালা রয়েছে 53.315 কিলোমিটার । বিএসএফের উত্তরববঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের 932.389 কিলোমিটারের সীমানার মধ্যে প্রায় 100 কিলোমিটার পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া নেই । ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় 558.68 কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ফ্লাডলাইট লাগানো হয়েছে । কিন্তু রাতে ও সকালে শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে প্রহরায় বেগ পেতে হয় বিএসএফ জওয়ানদের । যার ফলে জওয়ানদের সংখ্যা বাড়িয়ে নিরাপত্তার পরিধি কমানো হয় । ছোটো ছোটো এলাকা করে দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
আরও পড়ুন : সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু যুবকের
65 ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট অনিল কুমার সিং বলেন, "শীতকালে ঘন কুয়াশার জন্য আমাদের খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয় । কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা 20 মিটারের কম হয়ে যায় । ফলে আমাদের জওয়ানদের কাজ করতে অসুবিধা হয় । এর জন্য আমরা বেশি করে গাড়ি চালাই । নজরদারি বৃদ্ধি করতে হয় । এই সময় আমাদের কাজ বেড়ে যায় ।"