জলপাইগুড়ি, 15 জুলাই: বেলাকোবার চমচম। নামটা শুনলেও মিষ্টি প্রেমীদের মুখে জল আসতে বাধ্য ৷ শক্তিগড়ের ল্যাংচা, বর্ধমানের সীতাভোগের মতো জলপাইগুড়ির বেলাকোবার চমচমের কদর সর্বত্রই। কিন্তু বাংলার রসগোল্লা যেমন নিজস্বতার স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমন স্বীকৃতি পাওয়ার লড়াই এখন চালিয়ে যাচ্ছে বেলাকোবার চমচম ৷ কবে মিলবে সেই সম্মান, দিন গুনছেন বেলাকোবাবাসী ৷
কথিত আছে, বেলাকোবার চমচমের আদি ঠিকানা ছিল ওপার বাংলা। দেশভাগের পর ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চমচম মিষ্টি নিয়ে আসেন দুই বন্ধু। বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের ধলেশ্বরী নদীর ধারে পোড়াবাড়ির চমচম কালিদাস দত্ত ও ধীরেন সরকারের হাত ধরে চলে আসে এপার বাংলায় ৷ দুই বন্ধু মিলে চমচম মিষ্টি বানিয়ে ফেরি করে বিক্রি করতে শুরু করেন। তারপরে দোকান দিয়ে বসেন বেলোকোবায়। সেই থেকে আজও বেলাকোবার চমচমের জনপ্রিয়তা একই রয়েছে। কালিদাস দত্তের পরিবারের সদস্যরা সেই ঐতিহ্য আজও বয়ে নিয়ে চলেছেন ৷
কালিদাস দত্তের ছেলে সুকুমার দত্ত বলেন, "আমাদের এই চমচম রাজ্যের কেউ তৈরি করতে পারবে না। আমাদের খুব দু:খের বিষয় আমরা আজও জিআই ট্যাগ পাচ্ছি না। আমরা অনেকবার দরবার করেছি কিন্তু পাইনি ৷ জিআই ট্যাগ পেলে খুব আনন্দ হবে। সৌরভ গাঙ্গুলির মুখেও বেলাকোবার চমচমের নাম উঠে এসেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও এই চমচম খেতে পছন্দ করতেন।"
কালিদাস দত্তের আর এক ছেলে বোধন দত্ত বলেন, "চমচম মিষ্টি প্রথম বানানোর কাজ শুরু করেন আমার বাবা। তারপর থেকে আমরাই এই কাজটা করে যাচ্ছি। তবে আগের মতো মিষ্টির সেই সাইজ নেই ৷ ছানার দাম বেশি ৷ দুধও আগের মতো ভালো পাওয়া যায় না ৷ তাই মিষ্টির গুণগত মান ঠিক রাখতে গিয়েই সাইজে ছোট হয়েছে চমচম ৷ তবে স্বাদ যেমন ছিল, তেমনই আছে। 20 টাকা, 50 টাকা মতো 100 টাকা দামেরও চমচম রয়েছে ৷ আমরা জিআই ট্যাগের জন্য চেষ্টা করছি।চমচমের স্বীকৃতি পেলে আমাদের ভালো লাগবে। বেলাকোবার নাম হবে। অনেই আমাদের চমচমের নকল বানাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের স্বাদের কাছে সেগুলো কিছুই না।"
আরও পড়ুন: ডিনারে নিরামিষ পদ ! আমিরশাহীতে মোদির জন্য 'শাহী' আয়োজন
বেলাকোবার বাসিন্দা অসীত গোস্বামী, কার্তিক পাল-ও বেলাকোবার চমচমের স্বীকৃতির দাবি করেছেন ৷ তাঁদের মতে, বেলাকোবার চমচম বিখ্যাত। কিন্তু খারাপ লাগে যে মিষ্টির সেই প্রচার হয়নি ৷ তাই জিআই ট্যাগ খুব দরকার। বেলাকোবার চমচম জিআই স্বীকৃতি পেলে সেটা বেলাকোবাবাসীর গর্ব হবে ৷